শেষবেলা
আরও কত ফুল ফোটা বাকি
এসো আরও কিছু বীজ বুনি
নাইবা দেখা হলো ভুট্টার বেড়ে ওঠা দিন
পাশ ফিরে শুয়ে থাকা দেখে
আমিও হস্তমৈথুনে অভ্যস্ত ফড়িং
আদিম অক্ষরগুলোর মানে না খুঁজে
এসো বরং ফ্রাইপ্যানে পপকর্ন ফোটা দেখি।
অস্ত্র
দয়া করে আমাকে তুলে ধরো
অনভ্যস্থায় ঋজু হাতযুগলকে বল দৃঢ় হতে
আমিও যে তোমার মতো একা
কোনো প্রতিশোধ নিতে পারি না
তাই জ্বলন্ত সব স্পৃহাগুলো খণ্ড-খণ্ড করে
শরীরে বহন করে চলেছি।
দুঃস্বপ্নের রাতগুলোতে নিরুদ্দেশ হতে গিয়ে
শার্টল ট্রেনে চেপে বসেছি
দূরের কোনো স্টেশনে নেমেছি
তবু ক্ষমাহীন ক্লান্তিগুলো খটখটে দুপুর অবধি অপেক্ষা করেনি
ফিরে এসেছে ক্ষধার্ত ধোঁয়ায় আচ্ছ্বাদিত কোনো বিবর্তিত মণ্ডপে।
অনুগ্রহ করে টানাপড়েনের এই বালিয়াড়ি থেকে আমাকে মুক্ত করো
আমাকে সজোরে চেপে ধরো
অনুভব করতে পারছ?
দ্যাখো আমি তোমার মতোই উত্ত্যক্ততায় তেতে আছি
ভীষণ তপ্ত।
বাদ জুম্মা
সবে গোরস্থ হলাম
প্রসিকিউটার মুনকার-নাকির
দুজন দুপাশে ঘেঁষে দাঁড়াতেই
অসময়ে আজানের ধ্বনি
এমনতো কথা ছিল না।
কেতাবের পাতার সত্য-অসত্যে গুলিয়ে যাচ্ছে
এ যেন প্রমিত উল্টে মুদ্রিতলিপি থেকে
ইচ্ছে মতো শ্রুতিলিপিতে উত্তরণ।
যাগ্গে, কিছু হ্যালুসিনেশন মন্দ নয়
যদি সেটা হয় আজানের নামে প্রেমগীত
নাহ্, সুমধুর ধ্বনি ক্রমেই বিলাপে রূপ নিচ্ছে
কানের খুব কাছে কেউ ফুঁপিয়ে কেঁদে চলেছে অবিরাম
একটা মুখ চোখের সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠছে, আমার কন্যা
যে দুপুরের খাবার ফেলে মা মা বলে ডাকছে
কন্যার বাবার কাছে প্রতিবেশি জানতে চাচ্ছে আমার মৃত্যু সবিস্তার
আমার অস্থির জিজ্ঞাসু দৃষ্টি প্রসিকিউটরের
মুখস্থ প্রশ্নে মিলিয়ে যাচ্ছে
চারপাশের অন্ধকার দেয়ালে মা মা শব্দ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে
আমি উশখুশ করছি, কালিমা-দরুদ গুলিয়ে পড়ছি
জান কবজ হওয়ার সময়ও এমন আবোল-তাবোল বকিনি
সফেদ কাপড়ের পুটলির গভীরে গিঁট দেওয়া হাত-পাগুলো
জীবন-মৃতে পেঁচিয়ে যাচ্ছে কেবলই।
আরও পড়ুন:
মোহাম্মদ নূরুল হকের প্রবন্ধ: যুক্তির শৃঙ্খলা ও শিল্পের দায় ॥ আজিজ কাজল