রানিং ট্র্যাক থেকে
রানিং ট্র্যাকেই আছি; কিন্তু কো-রানারদের সাথে
দৌড়াতে দৌড়াতে সহসায় কমে আসে গতি,
রাস্তার পাশে আহত দৃশ্য হয়ে উঠি;
পরে বুঝতে পারি পেছন থেকে ধাক্কা দিয়েছিল;
সংলগ্ন বৃক্ষ ডাক দেয়, বলে,
আরে কি লাগি দৌড়াও!
তারচেয়ে এসো, বসো এ ছায়ায়,
কান পাতলে শুনতে পাবে
হাওয়ার আঙুল সবুজ শাখায় বাজিয়ে চলেছে
কানাইলালের দুরন্ত দোতরা!
সেই সুরে কান দিয়ে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ি!
জেগে উঠে দেখি—
রানিং ট্র্যাকের কাছাকাছি এসে গেছে আরেক দল।
দৌড় লাগাই। নানা কূটকথা আসে কানে;
বুঝতে পারি নতুনরা আমাকে উপদ্রুব জ্ঞানে
ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে চায়;
তবু দৌড়াতে থাকি; মোড়ের কাছাকাছি পৌঁছাতে
যমুনার জল ছুঁয়ে আসা হাওয়া হয়ে ওঠে আবদুল আলীম;
কৈশোর এসে জড়িয়ে যায় পায়ে। কমে আসে গতি।
ধাক্কা দেয় নতুনের দল: আরে ভাই,
রাস্তার মাঝখানে থাকতে হলে জোরে দৌড়ান,
নাহলে রাস্তা ছেড়ে বসে পড়েন কোথাও।
আমি না ঠিকমতো দৌড়াই,
না রাস্তার দুপাশের বৃক্ষদের সাথে সারিবদ্ধ হই।
একটি করাত বারবার দু’ভাগ করে দিয়ে যায় এই আমাকে
অথচ দুপুরের গায়ে রোদের মতো
আমার দুঠোঁটে লেপ্টে থাকে হাসি
আমার এই হাসি দেখে হাসে অগুনিত নদীমাতৃক উপহাস!
বাঁশ বেয়ে চলা দিন-রাত
ছোটোকালে কাজলাদিদির বাঁশবাগানের
মাথার ওপর ওঠা চাঁদ দেখার কারণে হোক
অথবা কৈশোরের পাটিগণিতের প্রভাবে,
আমরা রাতদিন বাঁশ বেয়ে চলেছি—
সঘাম ও ঊর্ধ্বমুখী
এই উঠি এই নেমে যাই;
নিতম্বের হাল নিয়ে কথা বলা অশ্লীলতা
কিন্তু খরচাপাতি?
মহাজনী সুদের লাহান আমাদের মাথায় ওপর
বেড়ে চলেছে তেল-সংশ্লিষ্ট বোঝা ও দায়
আর বাতাসে ছিটকে পড়া
তেল মেখে হাতে
আমরা হাততালি দিচ্ছি—বাহবা! বেশ! বেশ!
ডারউইন পড়া আছে বলে
বানরজাতীয় গন্ধ নিয়ে আমি বিব্রত নই
আমার উৎকণ্ঠা অন্যখানে।
ওগো ভালোবাসা
আমি তো না হয় কোণঠাসা পরিচয়ে
তুমি কেন প্রিয় সচেতন উদাসীন?
ভালোবাসা মরে সময়ের অপচয়ে
তাহলে কি শেষ আমাদের যত দিন?
তোমাকে খোয়াতে হয়নি কো কোনো সাথ
তোমাকে খোয়াতে হয়নি কো আনা পাই
তোমাকে বোঝাতে রচিনি কো অজুহাত
তোমাকে চেয়েছি যতটুকু চাওয়া যায়।
আমি তো করিনি র্যার-রঙ জোরাজুরি
আমি তো চুমিনি গররাজি কোনো গাল
আমি তো রচিনি ভিলেনের বাহাদুরি
স্রোতের উজানে উড়ায়েছি শুধু পাল।
যদি বলো কিছু ঘটে গেছে এরি মাঝে
যদি বলো কিছু রটে গেছে আশেপাশে
যদি বলো কিছু ভুল হয়ে গেছে কাজে
যদি বলো কিছু কানাঘুষা এ বাতাসে;
নিউজপেপার? মেলে দ্যাখো তার খাতা
খুনের খবরে শিরোনাম লোহুলালা
একটিও নেই প্রেম-প্রণয়ের পাতা
যত দেখি তত চোখ হয়ে ওঠে জ্বালা।
তাই বলি, প্রেমে কী এমন ক্ষতি বন্ধু,
রটনার কালে বাড়লো বা কিছুটাই
প্রেমের খবরে বাঁধবে না আর যুদ্ধ
যেথা প্রেম সেথা পেনটাগন তো নাই।