ফুলশয্যার পুরুষ
ফুলশয্যার পুরুষের মতো স্থির, সবল আর উত্তুঙ্গ,
অস্তিত্বের মতো নিশ্চিত রঙ আর তৃষ্ণা!
বুকের বোতামগুলো আটকাইনি,
জড়িয়েছি বেহালার তারে,
ঘা দেওয়া সুরে বাজতে চেয়ে নেশাতুর মদের
ঝাঁঝালো-গন্ধ মেখে হিলহিলে নদী হয়েছি।
উজ্জ্বল শ্যামবর্ণা যৌবন শরীরে ভরে দিক উদ্দীপনার পিপাসা-
সুর দাও,
রঙ দাও,
জল দাও,
কাচপোকা দাও;
সৃষ্টির কামনায় পূর্ণ হোক জীবন,
জলের তলে ডুবে ডুবে থাকা রামধনুর মতো রহস্যময় সুন্দর!
আগুনে পুড়ে পুড়ে অঙ্গারে চেয়েছি
মাটির কলসের ঠাণ্ডা শীতল জল।
সুর তোলো,
ঝড় তোলো,
তৃষিত উষ্ণ ঠোঁটে
ফুল তোলো,
কুয়োর ভেতরে থাকা
জল তোলো-
কোটর থেকে বেরিয়ে আসুক
পিলপিল পীপিলিকার দল!
দ্রুত লয়ে বেজে চলেছে
অনন্যমনা বিষণ্ণ সুর-
দেহটা বেহালার সুর হোক,
মনটা রঙের বাগান হোক,
নতুন কোনো আন্দোলন আসুক,
ছোট্ট পোকারা খুব বেড়ে উঠুক।
নিস্তরঙ্গ মধ্যসমুদ্রে জন্মানো ঢেউ
আছড়ে পড়ুক জলের কিনারায়!
সুরটাকে বাজতে দাও
শরীর ভরিয়ে বাজতে দাও
মন জুড়িয়ে বাজতে দাও-
একটা অন্তত পূর্ণ সুর হোক
একটা অন্তত পূর্ণ রঙধনু হোক
একটা অন্তত পূর্ণ জীবন হোক।
গতরঘ্রাণ
রঙ চাইতেই দিয়েছিলাম এক নদী রঙ;
মন ভরেনি,
তোমার ছিল সাগরের হাতছানি!
জল চাইতেই দিয়েছিলাম এক সমুদ্র জল;
ভরেনি প্রাণ,
তোমার ছিল মহাসাগরের টান!
ঘ্রাণ চাইতেই দিয়েছিলাম এক অরণ্য ঘ্রাণ;
মেটেনি সে সাধ,
তোমার ছিল গতর-ঘ্রাণের তীব্র আহ্লাদ!
মুখটা মনে করতে পারছি না
মুখটা মনে করতে পারছি না কিছুতেই!
এমনটাও যে হতে পারে,
অবাক হচ্ছি ভেবে!
বুকের এতটা গভীরে থাকা কারও রূপরেখা
বিস্মৃত হওয়াও সম্ভব তাহলে!
অস্বস্তিতে কেটেছে সমস্ত রাত,
মস্তিষ্ককে বারবার বলেছি, একটু শুধু দেখা চাই,
একটি মুহূর্তের জন্য, কল্পনায়;
অকল্পনায় দেখা, সে-তো বহুদূর!
এতটা শঠতা কখনো করেনি স্মৃতিরা।
মৃত্যু এলেও অপেক্ষায় রাখা ছাড়া গতি নেই,
নিরুপায় আমি;
মুখখানি মনে না করে চলে যাওয়া যায় না,
বাস্তবে দেখা সে-তো বহুদূর!
সীমাহীন কষ্ট, সীমানাহীন কষ্ট, ধারণে অপারগ;
কিছুতেই যে মুখটা মনে করতে পারছি না, তার!
প্রচ্ছন্ন
শুনতে পাচ্ছ?
বুকের ভেতর ড্রাম পেটানোর শব্দ হচ্ছে!
দেখতে পাচ্ছ?
পৃথিবীর সব আবীর যেন আমার দু’গালে!
বুঝতে পারছ?
একটা কিছু পরিবর্তন এসেছে আমার!
জানতে চাচ্ছ?
এমনটা আগে কখনো হয়েছে কিনা!
বিশ্বাস করছ?
নিজেকে নিজেই লজ্জা পাচ্ছি যেন বা!