প্রেম ও প্র্যাকটিস
এতদিন ঘুরে ঘুরে তুমি বুঝে নিয়েছ যেনবা প্রেম কিছু নয়; কেবল একটা প্র্যাকটিস!
যেমন চায়ের কাপে তুমি রোজ যে ক’চামচ চিনি খাও, আপেলে কামড় বসানোর পর তা যতক্ষণ চিবোতে থাক, পপকর্ন খেতে খেতে উড়ে যাও হালকা হাওয়ার ভেতর, রেস্তোরাঁয় বসে বসে বিড়বিড় করে সুর ভাঁজ, ভাঁটফুলে বুঁদ হয়ে যেমন খুঁজতে থাক কোনো ভ্রমরের পদচ্ছাপ!
ভুলে যাওয়ার পর প্রেমিকাকে মনে হতে পারে ওটা এক সাদাকালো আর্কাইভ—যেমন কবিতা লেখা ভুলে গেলে একদিন তোমারও মনে হতে পারে ওগুলো আর কিছুই নয়—খালি টুকরো টুকরো ছন্দ আর শব্দের ফসিল!
দরজা
দরজার নামফলকের মাঝে চাপা পড়ে থাকে
হারানো প্রেমিকাদের নাম!
দরজার কাঠ থেকে জেগে ওঠে কান্না
ধাতব চেরাই শব্দ—
হু হু আর্তনাদ—বিলাপ ও নৈঃশব্দ্য!
দরজার আড়াল থেকেই জেগে ওঠে
যত জমে থাকা দীর্ঘশ্বাস!
জানি এ দরজার ওপাশেই ঘটেছিল
যত পাপ ও প্রহেলিকা—
মোহ ও মায়া—মধু ও মাধুকরী
সব ভিড় করেছিল এ দরজার ওপারেই।
তোমার শরীরজুড়ে
কীটদষ্ট চুম্বনের ছাপ—
যা আমি সযত্নে এঁকেছিলাম
সমূহ ভূগোলজুড়ে;
তাও ঘটেছিল এ দরজার আড়ালেই!
দরজার ওপাশে এখনো দেখি
সটান দাঁড়িয়ে আছে কেউ—
যার রাতচেরা দীর্ঘশ্বাসগুলো
এখনো ভাসতে থাকে কার্নিশের ছায়াভ্রমে!
জঙ্গল ও তাঁবু
তোমাকে আগেও আমি বলেছি প্রেমের জন্যে আমার একটা নিঝুম জঙ্গল চাই! অথবা প্রেমের জন্যে আমার একটা নিঃশব্দ রিসোর্ট চাই! কমপক্ষে আমার একটা সুনসান তাঁবু চাই!
অথচ তোমার পাশে বসতেই কোত্থেকে যেনবা কিছু ছায়াশরীর এসে জুড়ে যায়—তারা আচমকা ঘিরে ধরে আমাদের—তাদের চোখের লেন্স ধরে ফেলে রেস্তোরাঁর আলোআঁধারিতে হাত ধরে বসে থাকা আমাদের!
জঙ্গলের গহিন ভেতরে একটা তাঁবুর জন্যে অপেক্ষা করছে আমাদের প্রেম!