(উৎসর্গ: আমার প্রাণের ভাতিজা পিয়াল ১৯ বছর বয়সে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় চলে গেছে না ফেরার দেশে।)
মোবাইলের রিংটনে ভেসে আসে
প্রতিদিন কত রকম অজানা খবর
দূর থেকে মামা বললেন শুনেছ কি তুমি তাই
তোমার প্রাণের ভাতিজা
পিয়াল আর বুঝি বেঁচে নাই
কেমন করে ঘটে অঘটন
শুধাতেই মামা কাঁদে
বাইক চালাতে গিয়েছিল ও
পিচ ঢালা রাস্তার বুকে
এমন সময় ধরেছিল ও বেঁধে রাখা
বাইকের ব্রেক প্যাডেল তার
সড়ক দুর্ঘটনায় মরণ হলো ওর
ফিরাতে পারেনি আর।
দাদা-চাচা, বন্ধু-স্বজন
কেঁদে গড়াগড়ি যায়
দু-হস্তে মুখ, চেপে ধরে কান্না
ঠেকাতে পারিনি তাই।
অশ্রু সিক্ত চোখে দূরে
তাকিয়ে দেখি হাই
আমি কাঁদি, দাদা কাঁদে
ওর ছোট্ট বোনটি তো কাঁদে নাই
পাহাড় সম ভারী যেন সে
চলছে না তার পা
অল্প শোকে কাতর
আর অধিক শোকে পাথর
আজকে প্রমাণ মিলিল তা
হৃদয়ের ধন আদরের বোন
যেন আদর মাখা মুখ
কচি মনে ওরা সইবে কেমন
ভাই হারানোর দুখ।
মারা গিয়েছে এই সংবাদ
দেওয়া হয়নি তাই
হন্ত-দন্ত ছুটে আসছে
ভাইরে বাঁচানো চাই
লাশ দেখে লুটে পড়িল
ধূলি মাখা বারান্দায়
সজোরে ডেকে বললেন বিধিরে
আমার জীবন নিয়ে নাও না
ভাইয়ের জীবনের বিনিময়
কেমন করে বাঁচবে তারা
দু নয়নে পিয়ালের কবর খানা
বৃদ্ধ দাদা বুঝিনি কখনো
বিধি হবে যে বৈমুখ
নিজ হস্তে কেড়ে নেবে
বিধাতা তার সকল সুখ
পিয়ালের লাশ দেখে মাতা
বললেন ডেকে তারে
শুয়ে আছিস কেন ওরে
ভোরের বেলায় ডেকে দেইনি
তাই অভিমান করে
বুঝলেন যখন পিয়াল নেই বিশ্ব চরাচরে
মাতা তখন কাঁদতে লাগলেন মাটিতে আছাড় পেড়ে
অতপর দুই হাত জোড় করে
মাতা বললেন আল্লাহর দ্বারে
কেন বুকের ধন নিয়ে গেলে
তুমি অমন করে কেড়ে
আজ গাঁয়ের রত্ন যাচ্ছে চলে
কয়া গ্রাম ছেড়ে
এখন শুধুই পড়ে রইলো বাপজানরে
তোর স্মৃতিগুলো আমার
বেদনার বসত-ঘরে।