পৃথিবীর আদিম বটগাছের নাম অসহায়
রামের বোতল শেষ করে যিনি পর্বতের চূড়ায় অনড় দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি জগতের বড় ভাই! তার নাম অসহায়! রামের পায়ের কাছে হনুমান শুয়ে থাকে। পর্বত হাতে নিয়ে হনুমান যাচ্ছেন। শিব বসে আছেন চূড়ায়। শীষনাগের মাথায় পৃথিবী। সূর্যের চারদিকে ঘুরে। রামনাম।
আমার ঘোর গেল না সাঁই। মনমন্দিরে অযথাই যেসব তোলপাড় তার সাথে যোগাযোগ হলে বলে দিও কবির নিয়তির সাথে মরণের কোনো যোগ নাই। কেবল দহন, আর্তনাদ, দুর্দশা ও নিঃসঙ্গতা আছে। পৃথিবীর আদিম বটগাছের নাম অসহায়। কবি সেই গাছের ছালে পিরিতের ঔষধি বানিয়ে অস্থির মাছেদের বিতরণ করে।
গেল রাতে অস্থির গুলির আওয়াজ বিদীর্ণ করেছে মায়ের আঁচল। দাঁতাল শুয়োর হাসছে গণতরিকায়, তন্ত্র হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে মদদে।
কবির মসনদ লাগে না। না গণতন্ত্র। সে নয়া নয়া দুনিয়া পয়দা করে অক্ষরের অন্তরালে। দেখে নিও। সূর্য যখন হাসে।
লেট আস ফাক আওয়ারসেল্ভস
পাখিটা হুট করে ওড়ে গেল চোখের সামনে। আকাশ খোলা। মানে জানালা দিয়ে আকাশ দেখা যায়। তোমাকে যায় না। তুমি রাষ্ট্রীয় শাসনে থাকো, আর আঁকো চিত্রকলা, শব্দছবি। এসব রাজকৃপায় বালছাল কামকর্ম ভাল্লাগে না। তারপরও তোমার চোদন থামে না। কথা বলছ তো বলছই, অবিরত, রাষ্ট্রীয় শাসনরত।
আমি বুড়া আঙুল দেখায়ে বলেছি সকাল বালছাল। শুভ নয়, অশুভের সকল উত্থান অন্ধকারের মতন সকালেও উদয় হয় এই দেশে। দেশ মানে মরার কল। রাস্তার যেসব ফলাফল দেখছ চাকার হাওয়ায়, যেসব প্রাণ ঝরে যাচ্ছে সকাল না হতেই, দিনে-দুপুরে, তাদের রক্ত নিয়ে যে সকাল আসে তাকে মৃত মনে হয়। মনে হয়, একেকটা মদনা চোদনা ওড়ে এসে জুড়ে বসে সূর্য ওঠায় আর ডুবায়, আমাদের রক্ত খায়। তারা একেকটা চ্যাটের বাল।ফরমায়েস। চাটুকার। তাদের ঠাপানোর খুব টাইম নাই; ভাই। দিদিগণ ও দাদারা। আঙ্কেল ও আন্টিগণ। মনে না ল্ইবেন সেই ক্ষণ যখন আমার সন্তানেরা চাকার দাপটে মরে যায়!
হায়! আমরা বরং আসেন পেন্টাগন নিয়ে কথা বলি। ঢাকার ভিতরে দিল্লী ঢুকে আমাদের হিল্লা করে গেছে।এই আনন্দে চলেন পেন্টাগন যাই। আর বগল বাজাই, হুদাই; নিজেরে চোদাই; মরার দেশে; খুব অক্লেশে। সড়ক ছেড়ে ছেলেমেয়েরা তো পাঠে দিলো মন! হুররে,আর কোনো উচাটন ভাব নাই! আপনি আসলেই ভোদাই! আসেন, নিজেরে চোদাই। লেট আস ফাক আওয়ারসেল্ভস।
আমার বাদশাহী অনাদরের বিরান মাঠ
আমি মরে যাই নাই। বেঁচে আছি তালগাছের পাতার মতন। তা মন্দ করুক কেউ। মরুক। আমি নাই। আমার বাদশাহী জারি আছে প্রেমে।
লোকে বলাবলি করে ‘ভালো লাগে না কিছু’। আমি, চিলে কান নিছে তার পিছে যাই না। নিজেরে জিগাই, মন, তুই কেমন আছিস এই আজিব তামস নগরের বারান্দায়। আন্ধায়ও জানে উজানে নাও বাইলে বেইলে তীরে যাওয়া সহজ হয় না। খাঁচার ময়নার চোখে দেখি উড়তে না পারার অসহায় পেরেশানি। মানুষে মানুষেও তাই জানাজানি হয়, মুখের দুয়ারে নকি ঝুলিতেছে প্রতিবেশীর তালা!
কালা, আমার সুখ তোমারে লয়া। আমারে না জানায়া রাত-বিরাতে কই যাও, টাকার মেশিন, চাকায় ঢাকা পড়ে কার লাশ? আমার হাসফাঁস নাই! এমনকি কোনো রা’ নাই তালামারা মুখে। রাও করলেই কতল, শতদল ফোটে না আর সুনসান, যা ঘটে গরিবি কপালে তা-ই ঘটমান। মান করে লাভ নাই! আমজনতা খেলার পুতুল। চটুল খিস্তিখেউরে তারা টক শো মারে, জি-বাংলা দেখে, রাজনীতি আর খেলাধুলা করে। আমার অবেলায় বেলা জাগাতে চাই বইলা তোমাদের নালিশ জমা হয় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে।
অনাদরে সোনার দেশ পড়ে আছে বিরান মাঠের লাহান। তার দিকে বেখায়াল বোয়ালেরা ধরা পড়ে খর রোদে। অবাধে।
এই দেশে মরারও জাত আছে, লাশেরাও সাম্প্রদায়িক! লোকে বলাবলি করে, তারা নাকি বলি হচ্ছে সমগ্র মানচিত্রের বর্গমাইলে। দেশ নাকি ভাল নাই! আমি জানি না কিছু। কেবল জিহ্বার আড়ষ্টতায় ঝিম মেরে আছে মুখ। আমার বাদশাহী।
সম্ভাবনা বেচে দিয়েছি ম্যাজিক পাখির কাছে
জাদু, পৃথিবীর সমানবয়সী তোমার পা। যতদিন বেঁচে রয় সময়, নিঃশেষিত হওয়ার আগ অব্দি, তোমার ক্ষমতার পা বেঁচে থাকে। তোমার নাম আয়ু।ক্ষণমাত্র! না, মাতাল বৃদ্ধের চাঁদ-সুরুযের গল্পের মতন। যখন কেউই ঠাওর করতে পারে না আলোর আদল।
আমাদের বেঁচে থাকবার সকল সম্ভাবনা বেঁচে দিয়েছি পাখিদের কাছে। জানা গেলো, তাদের পায়েও ধাতব ক্ষমতার গরল। আমাদের সরল সহজ বেঁচে থাকার দায় নিয়ে পাখিরা পড়েছে বিপদে।তারা বুলি যদি ধরে কোনেদিন সেদিন সূর্য উঠবে। স্বপ্ন তার নাম।
আর আদি পাপের মতন, জাদু, তোমার পা থেকে খসে পড়বে দাপুটে সব আঙুল। আমরা সেদিন আলোর হাসিতে বসে বসে অবমুক্ত লজেন্স খাব।
আমি মায়ের কবর, জেগে আছি
আমি ব্যক্তিগত। জীবন ও যাপন করি। তুমি সুন্দরলতা। জানি। আমি রাষ্ট্র বানিয়েছি। অবিরত রক্তপাতে। অসম্ভব কলিজায়। তুমি তার মর্ম জানোনি।
এখানে কালি ও হতাশা। কলমের নিব ছেঁটে আমরা বাঁশপাতায় লিখছি মায়ের নাম। ছোট অক্ষরে। দরদে। তুমি দরদ জানো না। মহামহিম।
যত আঁকো ততবার দাগ। রক্তের। কালিমার।
তোমাকে আমি পাহারা দিয়েছি সারারাত, মা। রক্তে ও অন্তরে। দুর্বৃত্তের কবল থেকে রক্ষা দিতে। তোমরা হামলে পড়ো না। অত্যাচারী শাসকের মতন।
আমি মায়ের কবর। জেগে আছি।
ততবার রং মাখো। দাগাও। তাসের রঙের মতন তুমি অভিলাষী অন্তর। ভাসিয়েছো তরী, দিগ্বিদিক।শাসন মানো না। না জীবন ও বেদনা।
আমি রক্তপাত। একাত্তর আমার নাম।
আজ অন্তরদাগে ভাসছি মাঝসায়রে।
কপালে কবর নিয়ে ঘুরে বেড়াই
খুব ঘুম পাচ্ছে সকাল। কেননা, আপনি খুব ভালো। কাকে যেন তুলে নিলেন। গ্রেফতার করলেন কোন পতাকা যেন! লালসবুজের!
এবার হেন সকালে আলো জ্বালো। ঘুমাতে দাও। নিষ্পৃহ রক্তের পতাকায়। মা।
জানো, তোমাকেই ভালোবেসে আমি আজ রক্তাক্ত সবুজ জমিন হয়েছি।
জিহ্বা ছেঁটে দিয়েছি পাঁচ ক্রোশ আগে
আঙুলের ডগায় ডগায় ব্যথা জমে আছে কেটে নেবার হেতু। কোনো নখর নেই যে তোমাকে আঁচর দেবে। অবশ হাত-পা দেখে কীবোর্ডের হরফগুলোও ঠিকঠাক জেগে উঠছে না ভয়ে।এই তবে রক্তের প্রতিদান! মহান মহান বলে যারা ফেনা তুলে ভেসে যাও ভোগের অশেষে, খাল কেটে কুমীর এনে দেখাচ্ছ ভীতি, আর ফণা তুলে আছ অহর্নিশ, এর নিভৃতি না হলে কলমের নিব কেটে দিয়ে বানাব মরণের প্রতিমা।
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমার জিহ্বা ছেঁটে দিয়েছি পাঁচ ক্রোশ আগে। এবার তবে একক নৃত্য করো স্বৈরসময় বাকহীন লাশের বাগানে।
আমরা তোমার ক্রীতদাস
মা রে, আমরা তোমার ক্রীতদাস।
তোমার দয়ায় বেঁচেবর্তে থাকি
তোমায় আমরা মাথায় তুলে রাখি।
আমরা কিনা তোমার দাসানুদাস!
আমাদের পূবপুরুষে ছিল না বনের রাজা
মা রে, আমরা বনমাতারই প্রজা।
আমরা তো মা, অল্প খেয়েই বাঁচি।
আমরা এত উন্নয়নে করি নাচানাচি!
তবুও কিনা আমরা বলি, রাতবিরাতে গুম!
গণতন্ত্রের বটিকাসেবী, আমরার লম্বা ঘুম!
নিদ্রা-মরার কী-বা অপরাধ
দেখ, মা রে, হাসি না কতদিন
কবে ঘুচবে, ও জননী, আমরার জন্মঋণ!
কবে হবে পূর্ণ তোমার অতি সাধ!
মা রে, আমরা তোমার ক্রীতদাস।
রা নাই মুখে, আমরা তো উদাস
আমাদের নাই কোনো উচ্ছ্বাস
নাই যে কোনো আশ, নাই যে অভিলাষ
আমরা কিনা উন্নয়নের লাশ!
আমাদের নাই কোনো চাওয়া
আমরা কিনা দিনেরাতে খাচ্ছি চাকার হাওয়া!
মা রে, চাপাতি আর হেলমেটে ও গুলির আওয়াজে
জেল-রিমান্ডের পাই যে অনেক ভয়
আমরা তোমার দাস, প্রজা যে নিশ্চয়!
খাজনাপাতি সবই তো দেই ঠিকমতো
তবুও আমরা বলি কেন হচ্ছি অবিরত!
মা রে, আমরা হাসি না, কত যে বছর মাস।
ও রাক্ষসী মা, আমরা তোমার কেনা দাস!
হেয়াট অ্যা ফাকিং হেল, ডিয়ার
তুমি লাশ হয়ে ফিরো
আমি দাঁড়িয়ে আছি জুহুরের জানাজা!
আসরের, যদি কিছুমাত্র দেরি হয়!
মনে রাখ, আমার জানাজা
অবগাহনে
জহুর বা আসর, যেকোনো সময়
রওজা পার হয়ে আসো
ক্ষণমাত্র ভালোবাসো—
ভালোবেসে, আমার অমর মৃত্যুর দ্বার
তোমার উদার হাতে
আমারে না কেটে অশ্রুপাতে—
আগাম বয়ে যাও, কারণ ছাড়াই—
সাঁই, আমার সকলি উজার, সকলি বৃথাই!
তোর তরে, আমার অন্তর্গামীরে
তুমি লাশ হয়ে ফিরো
সখা হে, তীব্রতা ও প্রেম
আমারে নিজেই জ্বালালেম!
তোমাদের বানে
জগতের সকল অকল্যাণে!
হোয়াট অ্যা বাংলাদেশ সো ফার
হোয়াট অ্যা ফাকিং হেল, ডিয়ার।
মৃত্যুর ডাকটিকেট
‘মৃত্যু’ নামে একটা স্মারক ডাকটিকেট ছাড়া হয়েছে।
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে।
আপনার কত ইঞ্চি বুকের পাটা, হে সূর্য,
ঘন বনে দাঁতাল শুয়োরের মুখে
আলোর হাসি দেখতে চান!