পথেরা কিভাবে হারায়
এভাবে চলে যাওয়া
এভাবে চলে যাওয়া ঠিক হলো কিনা ভেবে দেখো
ওরকম করে তুমি আগেও গিয়েছ
নদীরাও যায়
নদীদের কে বারণ করে!
তুমিও যাচ্ছ তো মাঝেমধ্যে, তবে যাও।
কিছুই বলিনি, বলবো না
অপেক্ষাকে সরিয়ে দিলেই
এভাবে চলে যাওয়া
থাকা না-থাকার মতো তবু থেকে যাবে।
হয়তো মাটির বুক তাতে খানিকটা পুড়ে যাবে
তা পুড়ুক
অপেক্ষায় না-থাকাই ভালো।
নিশিথ পাখির মতো কত জেগে থাকি
সবুজ পাতারা হয় ধীরে ধীরে বিবর্ণ-হলুদ
উড়ন্ত পাখিরা সব উড়ে উড়ে সুদূরে হারায়
ফসলি জমিন তাও হারায় ফসলে
পথেরা কখন কোন পথে কিভাবে হারায়
মানুষেরা তার খোঁজ কত রাখে আর?
সন্ধ্যার কাসিদা
কুসুম দুপুরে তোমার কণ্ঠ বাজে।
বেজে ওঠে ওই দূরের জানালা পথে।
বুকের ভেতর ভিষণ আর্তনাদ।
দুমড়ে মুচড়ে ভেসে যায় ভেসে যায়।
বাতাসে বাতাসে করুণ শরীর নাচে।
কোকিল-দোয়েল তোমার কণ্ঠে গায়।
কে যেন সেদিন ডুবে ছিল বেদনায়।
দু’চোখের পানি নিয়েছিল শুষে শুষে।
ঠোঁটের রোয়ায়, চৈত্রের পিপাসায়।
যার কম্পিত বুকে মুখ ঢেকে রেখে—
দূরের দোয়েল ভেজা ডানা ঝাপটায়।
সেও ভালোবেসে রমণী তোমাকে খোঁজে—
শরীরের ঘ্রাণে খোঁজে ভোরে সন্ধ্যায়।
তাঁতের লাল শাড়িটা বুকে নিয়ে ফিরে যাচ্ছি
কেমন আছিস বোন? তোকে একদিন
তাঁতের একটা লাল শাড়ি কিনে দেবো
উঠোনের মাটি ছুঁয়ে কথা দিয়েছিলাম
উঠতি যৌবনে…
তুই তার পর থেকে দিন গুনেছিস অপেক্ষার
কতদিন চলে গেছে কালের গহ্বরে
কত নদী কত দিকে নিলো বাঁক সাপের মতোন
কত পথ কত দিকে গেলো চলে এঁকেবেঁকে
কত কত ভালোবাসা জন্মালো—মরলো
শাড়িটা যখন কাছে নিয়ে দাঁড়ালাম
সকালের পুরো কাঁচা রোদ মুখে মেখে
নদীর সোনালি ঢেউ বুকে মেখে নিয়ে
দেখলি না তুই আর তাঁতের শাড়িটা
তুই এখন অনেক বড় হয়ে গেলি
ধনে-মানে-সসম্মানে…
তাঁতের লাল শাড়িটা তাই বুকে নিয়ে ফিরে যাচ্ছি।