এক.
নয়নতারা, এই তবে বেশ
জীবনবাবুর নাট্যশালায়
মনখারাপের দৃশ্য বিশেষ।
কবি যখন শূন্য চোখে খুঁজতে থাকে
দিগন্তলেশ
তখন কি আর কবিতাতে
করতে পারে মনোনিবেশ!
নয়নতারা, তুমিই বলো
কখন তোমার মনখারাপ হয়
কখন তুমি দুঃখে জ্বলো?
দুই.
নয়নতারা, কেমন আছ?
ট্রাম্প জিতেছে, বিশ্বে এখন
দারুণ দামি ভাঙা কাচও।
এখন থেকে ঘৃণা এবং সাম্প্রদায়িক
মনোভাবে
একে অন্যের চুল ছিঁড়বে
ভালো যা, সব চিবিয়ে খাবে।
তিন
নয়নতারা, এই নগরে ভালো আছি
এমন ভালো
দৃষ্টিশক্তি কাজ করে না, অন্ধ দেখায়
চাঁদের আলো।
ট্রাফিক জ্যামে পুলিশ ঘুমোয়
পাগল দেখায় গ্রিন সিগন্যাল
নয়নতারা, ভালোই আছি
স্বপ্ন দেখায় দুর্গত কাল।
চার.
নয়নতারা, তোমার জন্যে এক মুঠো ভাত একটুকু নূন
আনতে গিয়ে চারিদিকে কী ভয়ানক যুদ্ধ ও খুন!
রক্ত ঝরে, মনন পোড়ে, অনুভূতির চিলতে মাঠে
সাত সাহারার তীব্র তাপে ঘাস উবে যায়, পাথর ফাটে।
ছয় রাগ আর ছত্রিশটি রাগিনীতেও সুর ওঠে না
পাখি, শিশু, ঝরনা এবং নারীর মুখে বোল ফোটে না।
যুদ্ধ এবং খুনের শেষে নয়নতারা থাকে না আর
খুনে মাখা নূন-লবণের ভালোবাসা চাই না যে তার।
পাঁচ
নয়নতারা, তোমার সাথে কথা বলা
সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ি দেওয়া
কিন্তু আমার জন্যে কি আর
ব্যাঙ্গমা আর ব্যাঙ্গমীরা
বসে আছে বিছিয়ে নিয়ে পাখার খেয়া!
নয়নতারা তেপান্তরের শূন্যতাতে ক্লান্ত বাতাস
ওপর থেকে ধূসর আকাশ সাত সূর্যের দীর্ঘশ্বাস
ছুড়ে মারে, পায়ের তলায় রুক্ষ মাটি কঠিন ঘায়ে
হুল ফোটাবে নগ্ন পায়ে।
তবু আমি এগিয়ে যাব তেপান্তরে শূন্য মাঠে
মনপবনের নাও ভাসাব সাত সাগরের ঘাটে ঘাটে
তোমার কাছে পৌঁছে যাব, তুমি আমায় ফিরিয়ে দেবে?
পারবে না তো নয়নতারা বরং প্রবল জলোচ্ছ্বাসের
মতো আমায় ভাসিয়ে নেবে
ভালোবাসার ঝরনাধারায়
যেখানে সব কষ্ট হারায়।
নয়নতারা তুমিই তুমি
সঞ্জীবনীর উৎসভূমি।