পাখিপৃথিবীর দিকে
সকল পৃথিবীর পৃষ্ঠপোষক কয়েকটুকরো মেঘ।
‘সকল’ কথাটি শুনলেই চমকে উঠতে পারো!
অথচ তুমি তো জানো, তোমার পৃথিবী
আমার নয়। আর আমারটি নয় তোমার।
কারও পৃথিবীই অন্য কারও বশ্য হয়ে ওঠে না।
বাগানে বৃষ্টিচূর্ণগুলো দেখলেই জোনাকি মনে করে
প্লাবন; কিংবা প্রখর রোদ দেখে ‘আগুন’ ‘আগুন’
বলে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের সাহায্য চায় যে উইপোকা,
তাদেরও নিজস্ব পৃথিবী আছে।
একদিন মরণের মৃত্যু হবে—এই প্রত্যাশায়
নিজ নিজ পৃথিবীতে ফুটেছিল প্রতিটি গোলাপ।
অন্যপৃথিবীর নদীগুলো ওদের ভাসিয়ে নেওয়ার আগে,
পাখিপৃথিবীর সদস্যরা ভালোবাসার মানুষদের জন্য
কেবলই ছড়িয়ে গিয়েছিল একেকটি সাদা-কালো পালক।
মোমেঘেরা মেঘনাট্যগুলো
তোমাকে একটি গল্প পড়তে দিতে চাই।
অথবা বলতে পারো,
. তোমার জন্য লিখতে চাই একটি গল্প।
শোনাতে চাই লালভ্রমরের উড়ে যাওয়ার
উপাখ্যান। হেমন্তকে ভালোবেসে যে মাঠ
গভীর রাতে কাছে এসেছিল, সেই মেঘনাট্যের
কোনও নায়ক ছিল না।
মোমেঘেরা মুহূর্তগুলো মানুষ বেশিদিন
মনে রাখতে পারে না। মনে রাখতে পারে না—
সুখের কলতান। প্রভাতের রোদ ফেরিদৃশ্য।
তবু সুউচ্চ টাওয়ারগুলো দেখলেই স্মরণ করতে
চায় মেমোরি থেকে ডিলিট হয়ে যাওয়া
ছবিদের গ্রাম। যে গ্রামে একদিন মাঠ ছিল।
শিশুদের পদছাপ ছিল। ভালোবাসার গল্প বলে
বলে জীবিকা নির্বাহ করতো;
. রাতজাগা কিসসা-কুমারেরা।
ন্যায্যমূল্যের দোকান
অনেক কিছুই বিক্রি হয় এখানে। অনেক তদবির;
ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয় মানুষ। অনেক মাংসের
পেশী সংকুচিত হতে হতে হারিয়ে ফেলে অস্তিত্ব।
কেউ কেউ ন্যায্যমূল্যে হিপ রিপ্লেসমেন্টের জন্য
দাঁড়ায় লাইনে। যারা অনেক আগেই বরণ করেছে
পঙ্গুত্ব, তারা ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
মূল্যের ন্যায্যতা একটি অমীমাংসিত বিষয়। কিংবা—
সবকিছু, একই দামে বিক্রি হবে সবখানে, এমন
লিখিত নিয়মও নেই কোথাও। তারপরও হাওয়াময়
প্রতারণার ঝাপটা এসে আমাদের জানালায় পেঁচার
মতো মুখ ভেংচায়। বোধহীন মানুষ আর ভাষাহীন
পাখিগুলো দেখে যায় অনেক মৃত্যু-পরিণতি;
লিখে রাখে অনেকগুলো চিহ্নিত ধর্ষণকাহিনি।