বৃত্তান্ত
প্রাক্ পর্ব
সূর্যের গ্রহণে শাদা-শাদা দিন—আমি ছিলাম
চন্দ্রের গ্রহণে শাদা-শাদা রাত—আমি ছিলাম
ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখলাম—
কুয়াশামথিত পৃথিবী যেন প্রকাণ্ড এক জলাশয়
চোখ ফোটার পর—দৃষ্টিজুড়ে নির্ভুল কুয়াশা!
মধ্যপর্ব
যখন নিভে আসে প্রান্তিকের খরার দাপট
সোনালি আলো হাতে কেউ তো আসে
ছায়া-আধো নিখুঁত শরীরে; তখন—
আমাকে পোড়াতে পারে না কেউ
ওহে, নীলচোখ প্রেমের সমুদ্র,
আর কত স’য়ে যাবো—নিভন্ত বিষাদ!
রাত্রিপর্ব
নিজেকে ফেরি করে তোমার কাছে ফিরে আসি
ফিরে আসি অকারণ-বিকেল বিলম্ব শেষেও
আমার স্বাধীনতা শুধু মর্মরে আঁকা মিথ
ধাতুফুলের ওমকার আর কুহকে ওড়ে অন্তরাল!
অন্তিমপর্ব
ভেতরে লণ্ঠন জ্বালো যে আছো দাঁড়িয়ে
ঘুমঢুলু আঙুলগুলো কামনার মাছি হয়ে ওঠার আগে
এ-দেহ খোদাই করো শিল্পের দামে;
কেননা, একদিন আমিই যযাতি কিংবা মার্কণ্ডেয় সূত
আমাকে বিশ্রাম দিও কানাইপারের ঘাটে!
বসন্ত-তরিকা
মাঘও মেলেছে জেদ— উড়ে যাবে বসন্ত শয্যায়,
থৈ থৈ গুপ্তগন্ধ আর সুপ্ত বাসনা জাগিয়ে!
তা
. র
. প
. র
বুকের ভেতরে জেগে উঠবে মধুর বরাভয়
সময়ের সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে নিকটে আসবে নদী
গুপ্ত উন্মাদনা সমবেত হবে প্রকাশ্য মিছিলে;
অথচ নির্বাক তুমি, সরে যাবে শুষ্ককলরবে—
আহা বসন্তমর্মর! যৌথ-উৎসবে চিরকাল
কেন ফুটে থাকো? ভান মাখো?
এ
. বা
. র
. বৃ
. ক্ষে
র
কোলাজ পেরিয়ে মুছে ফেল বিগত শোচনা
মুছে ফেল মানুষের সম্মিলিত পাপ—
জাগো মহামহিম, রুদ্রপলাশের ঐকতানে;
নিদ্রাবিঘ্নিত রাতের ঠোঁটে
অসমীচীন একটি বাক্যের ভেতর হঠাৎ ঢুকে গিয়ে
খণ্ডবিখণ্ড হতে হতে দেখতে পাচ্ছি—
নিয়তিজুড়ে রাত্রি নেমেছে; আর কিভাবে বিস্তৃত হচ্ছে
বাসনামিশ্রিত হাওয়া—অনুভব করছি;
প্রহর আরেকটু নিরিবিলি হলে ভাবছি,
এ অভেদ্য অন্ধকার কিভাবে পোষ মানাও!
হয়তো ভাবছ—তেজি মাঘশিশির গোপনে ধুয়ে দিচ্ছে
পৌষে জমানো উপচার! অথচ ভাবছ না,
বিনীত আঁধারের মতোই সত্য হয়ে উঠছে
প্রভেদের প্রত্যুষ, যা জন্ম দিয়ে চলেছে নতুন ঈর্ষার!
নিদ্রাবিঘ্নিত রাতের ঠোঁটে তোমার শ্রুতি উড়ছে
কিন্তু মনোবিকলন কিছুতেই থামছে না!