শবযাত্রা
আমাদের শবযাত্রা যাবে না শহর প্রদক্ষিণে—
তুমিও জেনে রেখো, এইসব কবিতা কারও মনোরঞ্জনের জন্য নয়
চোখে কোনো যন্ত্রণা নেই
শুধু সেঁটে আছে সকালের নীল রঙ, কুয়াশার মিছিলে।
এই তো এনেছ স্বাধীনতা
উঠোন পুড়ে যাচ্ছে টুপটাপ বৃষ্টির আগুনে,
এত দৃশ্য দেখার পর তুমি-আমি নতজানু হয়ে
হেঁটে যাব আমাদের মৃত্যুর দিকে।
তারপর আমাদের শবযাত্রা পৌঁছে যাবে কাঁটাহীন ফুলের শিবিরে;
আরও এক শতাব্দী পরে,
তুমি আমি জেগে রব আমাদের ঘুমের ভেতরে।
নিঃসঙ্গ যাত্রীর গান
বকুলতলায় ডাকছে কেন ঝিঁঝি
কোনো প্রেমিক আজ যাবে না পথে
ছড়িয়ে আছে হাজার টুকরো হয়ে
তোমায় দেওয়া প্রথমবেলার চিঠি
কারা যেন মৃত্যু আঁকে হাতে;
বনের মাঝে কোন কাঠুরের বাড়ি
গঙ্গা তাকে বর দিয়েছে নাকি
সোনার কুঠার তারও বুঝি হবে
আমার গেলো প্রথমবেলার চিঠি
ফুল আর তুমি বাঁধছ না আঙুলে
রাত জাগছো ট্রেন হারানোর ভুলে
স্টেশন তোমায় শোনায় মাটির কথা
যদি বুঝো, সারাটা রাত শোনো
বিপ্লবীরা আসবে সকাল হলে
তুমি মিছিল রাখছো কি আঙুলে!
নিখোঁজ সংবাদ
রাত একটা বেজে তেতাল্লিশ মিনিট
শহরে রিকশা আর মাইক নিয়ে কেউ বেরিয়ে পড়েছে,
একটি নিখোঁজ সংবাদ!
নীল রঙের একটি মন হারানো গিয়েছে,
যদি কোনো বিনুনি বাঁধা চুলের বালিকা
তার সন্ধান জেনে থাকে, তাহলে তাকে চিঠি লেখার অনুরোধ রইলো-
চিঠি লিখুন এই ঠিকানায়—
গ্রাম-হিজলতলী, পোস্ট-নদীর বাঁক, উপশহর-ব্রহ্মপুত্র
পোস্ট কোড-কবিতার ঢেউ ঢেউ পঙ্ক্তি।
রাত একটার পর থেকে ভোর অব্দি চিঠি জমা নেওয়া হয়,
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে এই ঠিকানা পৃথিবী থেকে মুছে যায়;
একটি নিখোঁজ সংবাদ…
বলতে বলতে হলুদ রঙের রিকশাটা শহর ছেড়ে বেড়িয়ে গেলো
আমি বারান্দায় বসে তোমায় নিয়ে কিছু লেখার কথা ভাবছি,
তোমার চশমাটাও হারিয়েছে গতকাল-
আমার মনও তো তোমাদের বাড়ির সীমানায় হারিয়েছে,
আমার না সে কথা একটুও মনে নেই।