মিশররহস্য
দেহ ও জাদুর সন্ধানে রোমানরা
কয়েকবার গেছে মিশর অভিযাত্রায়
বাইরে অপেক্ষায় প্রাচীন সমরাস্ত্র।
প্রাসাদের ভেতরে ক্লিওপেট্রা
নেকাব খুলে তুলে ধরে মিশররহস্য
একবার সিজার; অন্যবার অ্যান্টনি
তবুও পায় না রহস্যের কিনার
নিরাময় হারিয়ে যায় দেহের ভূগোলে এসে
মিশর অখণ্ড মমির সিংহাসনে বসে থাকে!
দ্বিতীয় রামেসিস
যুদ্ধের শেকড় সন্ধানে
এপিসের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন
কিশোর রামেসিস
এপিস এক প্রকাণ্ড ষাঁড়;
মিশর দেবতা তাহ-এর অবতার
সেই থেকে শিংয়ের মুকুটে
সজ্জিত দ্বিতীয় রামেসিস
কারিগরি বিদ্যায় অনন্য হয়ে ওঠেন
রচনা করেন সমাধিক্ষেত্র পিরামিড;
মমির রহস্যে জেগে ওঠা
জাদুর নকশা করা ধুসর সন্ধ্যা
মিশরতত্ত্ব
তোতেন খামেনের আয়ু সন্দেহ ও ষড়যন্ত্রে
পায়ের হাড়ের কাছে এসে দাঁড়াতেই
বিশ্বাসগুলো ছোট হতে হতে
দীর্ঘ ঘৃণার ছায়া হয়ে
পিরামিডের অন্ধকারে ঘুমিয়ে পড়ে
কয়েক হাজার বছর পর
. বিগত শতাব্দীতে
হাওয়ার্ড কার্টার সে রহস্যের উন্মোচন করলে
আমরা বুঝতে পারি
এ হচ্ছে দেহসংরক্ষণের অবিনশ্বর প্রণালী;
মিশরতত্ত্ব রয়েছে আরো অনেক গভীরে!
তুতেন খামেন
ছোটবেলায় ফারাও কী জানতাম না
শুধু ফেরাউনের নাম শুনতাম। শিশুমনে এক অধীশ্বর
ফেরাউন জায়গা করে নিয়েছিল; পরে জেনেছি
ইতিহাসের পাতায় একাধিক ফেরাউন রয়েছে!
এখন আমার প্রিয় ফারাও তুতেন খামেন;
কী আশ্চর্য প্রাচীন দুনিয়ায় তিনিও
ম্যালেরিয়া রোগে ভুগেছেন
তার সোনার কফিনে ও সমাধিক্ষেত্রে
অসংখ্য ছড়ি পাওয়া গেছে বলে
ধারণা করা হয় তিনি পায়ের হাড়ের সমস্যায় ভুগেছেন;
কিশোর বয়সী এই রাজার আবিষ্কৃত মমির এক্সরে
থেকে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে!
তুতেন খামেনের দাম্পত্য সংকটের এক্সরে হয় নাই;
কিংবদন্তির পাতায় তার রানি ও ঘোড়াগাড়ি চালক
পায়ের হাড় নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে…
আমি দেখতে পাই তুতেন খামেনের পা এখন
যাদুর হাড়। হাড়ের সম্মানে মিশর জেগে আছে!
নেফারতিতি
জানি না ভাঙা পাঁজর বিধ্বস্ত মুখের
. রহস্যময় রানি নেফারতিতি তুমি কি না;
তোমার রাজা আখেনাতেন!
যাকে খুঁজে পাওয়া যায় না
আমাদের সূর্যপ্রসূত দিন ও চন্দ্রকলার রাতে
অথচ মানুষের অস্তিত্বে জেগে আছে ছায়ার মতো;
তুমি আর আখেনাতেন
তাকেই কি খুঁজে পেয়েছিলে সূর্যের ভেতর!
মিসর সুন্দরী রানি নেফারতিতি
তোমার চোখে নীল নদের জল করে ছলছল!
তোমার প্রাচীন স্মৃতি আমার কাছে আগুনপাখি
মমি আর পিরামিডের প্রাচীন দেয়ালে
আজো ধরা দেয় তার উড্ডয়নের ছায়া অবিকল!
ক্লিওপেট্রা
সোনার পোশাকে মোড়া এই পৃথিবীর মানবী
. ক্লিওপেট্রা
একবারই দেয় ধরা রাজা অ্যান্টনির কাছে
আফ্রোদিতি থাকে শুধু কল্পনায়;
ক্লিওপেট্রা এসে দাঁড়ায় বাস্তবে
স্বর্গে শুধু সৌন্দর্যের ধারণা
অফুরন্ত কল্যাণ
আর আছে পরম আয়ুর সিংহাসন
পৃথিবীতে ক্ষুধা,দেহ আর রাজনীতি
আমাদের জটিল করে তোলে
ক্লিওপেট্রা সেই নারী
স্বর্গের সৌন্দর্যকে
দেহ আর রাজনীতির নৌকায় তুলে
আলেক্সান্দ্রিয়াকে অমরতা দিয়ে গেছে
মৃত্যুর বিষে অপরূপ দেহ লুটিয়ে
এখনো জেগে আছে আমাদের মনোবিশ্বে!