সন্তর্পণ
একটা মুখোশ দাঁড়িয়ে আছে শপিংমলে—
যেখানে দাঁড়ালে দেখা যায় টোকাইদের হুলুস্থুল কানাকানি।
যখন খরতাপে বুক চিতিয়ে লাল হয়ে ওঠে ক্রোধন,
তখন নিদান নাস্তানাবুদ দুপুরের রোদ ফেটে আবিষ্কৃত হয় সিনেমাসদৃশ বায়োস্কোপ—তখন দূর থেকে এও মনে হয়-হারিয়ে গেছে আমাদের বন্ধুসম শোকশাবক।
আচানক মুচির দোকান থেকে উধাও প্লাস্টিকের বয়াম!
গোল্ডেন বুট পা থেকে নামিয়ে অপলক দৃষ্টিতে টোকাইদের লক্ষ করে
মুচি ব্যাটারও দুঃখ-দুঃখ ভাব
ভাগ দেও, ভাগ দেও, দেও ভাগ
শীৎকার-চিৎকারে উড়ে আসে আন্ধারের বাসিন্দারা।
কেউ একজন বললো সেকেলে, সব সেকেলে।
আরেকজন বললো, ম্যালোডিক ড্রামা, পার্ট-থ্রি…সারাংশ।
চিৎকার যতদূর—ততদূর থেকে শেষেরজন হুমকি দিলো—
যা কিছু দেখছেন নায়িকার-শরীলে, সবটাই ম্যাটালিক,
খুলবেন ঠিকই—রক্ত পাবেন না।
আহা
দেয়ালশূন্য ঘর-বিলুপ্ত
আশ্চর্য!
খেয়ালশূন্য নেশা—প্রস্ফুটিত
টানতে টানতে এক টোকাই অটোমেটিক ফেরেস্তা বনে যায়—
এবং মনে করে দুনিয়াটা মূলত ফেরেস্তার বাপ-দাদাদের,
এখানে অযাচিত মানুষ পাঠিয়ে টিটকারি মেরেছে মানুষেরই সঙ্গে।
একটা মুখোশ দাঁড়িয়ে আছে—সন্তর্পণে—যেখানে দাঁড়ালে দেখা যায় নায়িকার চুরমার।
অন্তরে-পক্ষন্তরে
এক (মাস্টারনি) অঙ্কসমূহের সামনে দাঁড়ালে-খুলে যায় তব হৃদয়,
তখন ফার্সি এক মেয়ের কথা মনে আসে—
লম্পঝম্প করার মতন দেহ—ইনিয়ে-বিনিয়ে-ছিনিয়ে নিতো ভয়ার্ত কলিজা,
এখন-হাঁটাহাঁটির কৌশল জানা হয়-অঙ্কসমূহও সরতে চায়,
এমন-একদিন নেমে আসে অশরীরী গন্ধ—ধুপধাপ চিৎকার তেড়ে আসে, যেমন।
শাসন-বারণ কে বা মানে! কে বা ঘর বাঁধতে চায়!
যদি, বাউলের মনে বাসা বাঁধে-ঘর পলায়নের…
যদি সাধুর বাজারে সদা করে মৃত মীমাংসা—
তবু তার সুরাহা হয় না, ঠিক সুর আসে না-কৃঞ্চকণ্ঠে,
তখনো তুমি পাশে দাঁড়িয়ে অঙ্ক শেখাও নিজের মতো।
তবু
দলছুট হয়ে এমন এক সকালের সৃষ্টি হয়,
যাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টেনে নেওয়া যায়। পক্ষন্তরে সামলিয়ে ওঠা যায়।
দ্যাখো
একবার তাকালে দু’বার পেছন যেতে হয়…
হাসপাতাল: প্রচ্ছদপট
টুকরা-টাকরা ভবিষ্যৎ উল্টো দিকে ঘুরতে ঘুরতে—
উল্টানি রূপে অতীতপবন হয়, হায়!
অতঃপর আরেক টুকরা বর্তমান চলতে-চলতে—বর্তমানেই পতিত হয়
তবু এ সিংহদ্বারে হাসপাতাল সাজুগুজু করে অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত
এক দৈত্যাকার ছায়া এ সঙ দেখে ক্যাবল কাঁদে,
অথচ মোলাকাতে টেনে নেয় রিসিপশনের এন্ট্রান্স বুক।
এভাবে সময়ের মারপ্যাঁচে রাক্ষস-খোক্কস প্রণয় নিঃশেষ হয়—
স্তিমিতপ্রাণ টিকটিক করে ঘড়ির স্বরে ডাকে—তোমাকে।
তুমি এক টুকরা ভবিষৎ হয়ে যাও।
আরও পড়ুন: নির্বাচিত নবীনের কবিতা