তথা শরীর
ঠাণ্ডা শরীর মৃত, বড় একা
ভেবে আমরা থামাতে পারি না
মিলে যাওয়া, সঙ্গোপনে
মিশি তোমার শরীরে
কে জানে কার আত্মায়
কবেকার—
কোন দেহ ছেড়ে কোন দেহে
সে যাওয়া-আসা করে
বাতাসের নামে
আমাদের তো কিছু চেনা নেই
বাসাংসি জীর্ণানি, যথা বিহায়।
দেয়ালের ওই পাশে একা মৃত্যু
এই পাশে আমাদের
সন্ধ্যাযুগল—
উপগত শরীর জীবন আরোহী
ন্যন্যানি সংযাতি, নবানি দেহী।
দেবী
এইরূপে এইবারে
প্রকাশিত
হও
স্বরূপে—
এই ঘরে এখনো
সন্ধ্যা নামে না
ধূপে।
তুমি এলে আলো
হবে ঘর, সংসার।
দুই বউ
দেখি—
দুই বউ করতেছে খেলা আলতা পা’য়
তারা ভালোবাসে পরস্পর
এবং আমারে
বাতাসে শরতের শেষ, হেমন্ত পাতায়
ঝরতেছে একা। আমাদের কী তাতে?
সংসারে বিবিধ খুঁটিনাটি, ডাল ও চালে
বেছে বেছে কে ফেলেছে কাঁকরসকল
কার হলো
নখ ব্যথা সব আলু ছিলে
সেইসব
শুনে শুনে সারাদিন-সারারাত
হাত বোলায় পিঠে—চুমু দেই আঙুলে।
আমি, তারে বুকে রাখি
তুমি তারে পিঠে
সে হলো আমরা সকল
পরিশেষে
মিলে।
দুই বউ খেলা করে, দুই বউ নিরিবিলি
দুই বউ রোদে নারকেল পাতা
বসে থাকে একসাথে মিলে
দুই বউ
আচারের বয়ামে ভাগ
দুই বউ ঘুঘুদুপুর দুই বউ দস্যি জলে।
উঠোনে নতুন ধান, হাটবারে ব্যস্ততা
খুব। অবসরে মেলে না সন্ধ্যা
রাত নেমে যায় ঝুপ
উনুনে ভাতের হাড়ি ফোটে টগবগে
গলে যায় চাল বুঝি সতীনসোহাগে!
কলপাড়ে
অন্ধকারে
জোনাকিরা উড়ে উড়ে খোঁজে লেবু,
কলা। ডাকে পাখি, কানকোয়া দূরে।
রান্না হলে ঝটপট ইনুনি-বিনুনি চুলে
গা মুছে পাশাপাশি রূপকথা ঝুড়ি
খোলে। তালগাছের মাথায় করে
বসেছিল কে, বাঁশঝাড় নুয়ে পড়ে
পথে কার রাত্তিরে—
সকল পার করে
ফিরে আসি, তাদের বুকের গভীরে।
দুই বউ খেলা করে, মশারির তলে
দুই বউ খেলা করে
পুকুরের জলে
দুই বউ খেলা করে চোখ টলমলে।
ঘুম ঘুম চোখে কাজল, সরে যায় টিপ
পুতুলের এই জীবন তবু বুক ঢিপঢিপ।