জনপ্রিয়তা বনাম কবিতা
এখন আর কবিতা লেখা হয় না
কে যেন বললো, কী হবে কবিতা লিখে
এমন কিছু লেখো, যেন জনপ্রিয়তা আসে
জনপ্রিয়তা নিয়ে ভাবছিলাম
জনপ্রিয়তার রঙ খুঁজে না পেয়ে
জিজ্ঞেস করলাম, আজকের চাঁদের আলোতে হলুদ নেই কেন?
লোকটি হাসলো, এরপর ফিরে গেলাম প্রেমে
প্রেম নিয়ে চরম সন্ধিহান
মন খারাপ করে বললেন
আজন্মকাল পুরুষ হয়ে রইলাম।
ধর্মকে তিনি চাঁদ ও সৌরজগতের মিশ্রণে একীভূত করলেন
বিজ্ঞানকে অবলীলায় জানালেন, এটাও সত্যি নয়
যদি বির্বতনের মধ্যে আমাদের জন্ম হয়, তবে
এখন কেন বির্বতন থেমে গেছে!
এরপর চানাচুরে প্রচুর ঝাল মিশিয়ে আমাকে বললেন
কেউ আসলে সত্যি নয়,
ভালোবাসা বলো, প্রেম বলো এটা অভ্যাসের এক প্রক্রিয়া
চলো আজ আমরা বাতাস খাই,
স্রোতের কাছে সর্মপিত না হয়ে বেঁচে থাকি,
আমরা আফসোস না করে বরং এই ভেবে ফিরে এলাম
আসলে আমরাও যে যার মতো তুমুল একা…
কবিতার দিন রাত
এমন মাঝেমধ্যেই হয়,
বাতাসে খোশগল্প ছড়িয়ে দিলে
হ্যাপি অব দ্য ওয়ার্ল্ড চারিপাশ দুলে ওঠে,
পায়ের নিচে মাটি জানান দেয়
পথিকের পায়ের ছাপ তার মনে থাকে না,
যদিও বয়স ম্যারাথনে দৌড়াচ্ছে
তবুও সিরিয়াস হতে না পেরে
কয়েকটি বার এমন যে ভেবেছি তা নয়,
প্রতিটি ভাঁজে লুকিয়ে রয়েছে কয়েকটি গোলমরিচ
বৃষ্টি দেখলে মন খারাপ হয়,
ড্রেনে উপচানো গন্ধে পটাপট খুলতে থাকে
স্মৃতির দরজা
হঠাৎ মন খারাপ হওয়া
জটিল সমীকরণ
অন্য কোথাও গুম করে দেওয়া যায় না!
বিষাদ
আমার কবিতায় তুমি নামক
সম্মোহন নেই বলে অভিকর্ষ
বলয় থেকে ঝর্ণার
তীর পর্যন্ত শুকিয়ে গেছে মিষ্টি বকুল।
দুঃখের কবিতা
মন খারাপ হলে মরে যেতে ইচ্ছে করে
আমৃত্যু সরব গল্পে কোথাও মৃত্যু বিষয়ক রেসিপি নেই।
চতুর্দিকে যখন মেঘের সুরে আকাশ কাঁদে
জলপাই বিষাদে পতিত পতনের পরও
মৃত্যুর সময় অপসারণ হতে না পেরে
জড়াজড়ি করে ঘুমিয়ে থাকে পশ্চিমের দরজা।
এক অবাধ্য তান্ত্রিক জাদুবিশ্বাস ভেঙে
তৈরি করছে কিছু ডুমুর জাতীয় টোটকা।
চোখের কার্নিশে ফুলের বিশ্রী ভাষায়
শেয়ার করছে বৈকাল নিয়ে গল্পের রোদ।
অসুখের নামতা
০১.
পা বাড়ালে পথ হারিয়ে যায়!
দূরাভিলাষী রোগে ভুলেছি পথ
শরীর ভর্তি বিষাদ
আশার দৈব অভিশাপে
হাত বাড়ালে পথ খুঁজে পাই না ,
এখানে মানুষেরা বিরাগী হয়
বসন্ত ক্রমশ হলুদ হয়ে যাচ্ছে।
০২.
ওই বহুদূরে কে আছে!
কার পায়ে হিমেল আকাশ।
তুফান বইছে, সমুদ্র বড় একা,
কূল-কিনারা নাই
তুষার আগুনে পুড়ছে ,
হারিয়েছে বাড়ির ঠিকানা,
ওগো অজানা লোকালয়ে তুমুল অন্ধকার
চোখে বসত আঁকো থাকো কোন গায়ে
পায়ে জমেছে দুঃখের কৌতুক,
হাতে বিষের যন্ত্রণা।
০৩.
তুমি আছ! হাত বাড়ালেই পাই না কোথাও!
চোখে বিচ্ছিন্ন তেপান্তর, সীমানা নাই, কাটাতার নাই
শুধু ছুটে যাওয়া, এ যেন কষ্ট ফেরির অনশন।
তবুও আমরা ভালোবাসি প্রিয় কোনো ফুল
শুধু এইবার শিফন আলোতে উজ্জ্বল আমাদের চাওয়া
০৪.
এ ব্যথা বরং কবিতায় বাজুক
আজন্ম বিপ্লবী মানুষেরা কবিতায় দুঃখ পোষে।
আমিও পুষি, হাহাকারে বিভীষিকাময় শহর
পায়ে দিয়েছি তালা…যারা গান গায়
সুখের দোয়েলের মতো শিষ তুলে ফিরে যায় খোঁয়াড়ে
অনুতাপে পুড়ে ছড়িয়েছ আলোর বিচ্ছুরণ
কিছু মানুষ আজও অসুখে ভোগে।