১.
বৃষ্টি,সে তো কারো ব্যক্তিগত নয়
মাটি তার স্বামী, আকাশ তার প্রেমিক হতে পারতো
আমার বোবা অস্তিত্বে বৃষ্টি নেমে এলে বুঝি
কারো কারো ফেরার মন থাকে কিন্তু মানুষ থাকে না
কারো কারো ফেরার মানুষ থাকে কিন্তু মন থাকে না।
২.
কাল সকালে সূর্য উঠলে তাকে আর স্বামী না ডেকে একবার প্রেমিক ডেকো
জানি প্রেম জিনিসটা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মতোই অসম্ভব,কাল্পনিক
কাল সকালে আর চা আর চাকরির মধ্যে আঁটকে থেকো না একবার স্বেচ্ছাচারিণী হও
অথবা তোমার শাড়ি ম্যালা ব্যালকোনিতে আসতে পারো দুপুর দুটোয় তখন আমি নিজেকে বাঘের বাচ্চার মতো অনুভব করি
গ্রীষ্মকাল চলে এলো,তুমি তোমার হবু প্রেমিক স্বামীকে নিয়ে ব্যালকোনি টিকিটে সিনেমা দেখতে যাও
শক্তিশালী নারী হয়ে ওঠো,বুঝিয়ে দাও তোমার জোর,একেবারে বনবন করে ঘুরিয়ে দাও সংসারকে
তোমার ওই তেজ দেখেই আমি সুখী থাকি,আমার কবিতারা অলস উচ্চারণ ছেড়ে এক্কেবারে ক্ষিপ্ত গণ্ডার হয়ে উঠুক
তুমি তোমার কপালের মধ্যে রক্ষে করো এই শুকিয়ে যাওয়া গ্রহ,অনন্যা
আমি কবিতা এবং বাড়ির মালিকের বকেয়া ভাড়ার সাথে আর প্রতারণা করতে পারছি না
অনন্যা তোমার দেশ কি নদীমাতৃক?
৩.
তোমার অনায়াসে কাছে টেনে নেওয়া মানুষদের হলুদ চাদর বিছানা পড়ে থাকে প্রতিদিন আমার আশা যাওয়ার পথে
তোমার জ্বরের শরীরে আমি নির্বিকার শুয়ে থাকি সামান্য উষ্ণতার জন্য
আমার এই যুদ্ধ যুদ্ধ মন বোকা আকাশের সাথে ঘুরতে যায় কোনও এক বোবা সন্ধেবেলা
আর স্বপ্নের মধ্যে তোমার বুক আমার মাথা টেনে নিয়ে বলে- আমারই ভাবনার ভুল ছিল,বুকের পাথরেরাও একদিন বাড়ি ফিরে যায়
অনেকের বাড়ি ফেরা হয়, সকলের হয় না, তারা দুই-একটা কবিতা লিখে ভাবে মুক্তি পাবে
মুক্তি আসেনি কোনোদিন ,যারা আসে তারা মুক্তির খুড়তুতো ভাই
আমি তো মুক্তি চাই নি কোনোদিন তোমার এই গমের গন্ধ শরীর,তোমার এই মৃত্তিকা মন
কি লাভ,আমি সকালে উঠে কচ্ছপের মতো চলে যাবো, তারপর পৃথিবী আরও বেশ কয়েক পাক ঘুরিয়ে আমাকে ছিটকে ফেলবে অন্য কোনও চমৎকার দৌড়ে
থাক, এর থেকে তোমার এই জ্বরের শরীর, এই তোমার আগুন পোড়া নাভি
থাক, এভাবেই শুয়ে থাক তোমার উপর আমার স্বেচ্ছাচারী আত্মার শব্দেরা।
৪.
আরেকবার সমুদ্রে বিশ্বাস করো আত্রেয়ী
আরেকবার তোমার সমুদ্র থেকে উঠে আসা সিক্ত শরীরে মূর্ছা যাওয়া রোদে বিশ্বাস করো
নেমে এসো পথে,শাশুড়ির চায়ের বায়নাকে তুমি চমৎকার না করে দাও
অফিসে যাওয়া আগে বরের জামার বোতামদের তুমি প্রতারিত করো
তোমার পুরনো ওই বন্ধু জিন্সে তুমি নেমে এসো,তোমার ওই মাতাল কুর্তায় তুমি নেমে এসো আত্রেয়ী
তুমি সেসমস্ত মানুষকে বিদায় দিয়ে চলে এসো যারা রাখতে চেয়েছিল তবে থাকতে চায়নি
চলো,তুমি আমি কিনে নেবো দু-একটা পাহাড় সস্তায়
চলো,তুমি আমি নক্ষত্রদের মাঝে কথা বলবো বালির শরীরে শুয়ে সমুদ্রের সাথে
রাতের পর রাত কেটে যাবে পথে আত্রেয়ী,তুমি শুয়ে থাকতে পারো হাজার বছর
আমার এই কয়েকটা শব্দ, আমার এই কয়েকটা রঙ
আমার কোথাও যাওয়ার নেই আর,ফাঁকি দেওয়ার নেই নিজেকে
লাল পথ দিয়ে আমরা হাঁটতে হাঁটতে উড়ে যাবো আত্রেয়ী, আচমকা
তুমি নেমে এসো মেঘ থেকে এমন এক এপ্রিলের রাতে আত্রেয়ী
আরেকবার ধারালো কাজলে বিশ্বাস করো আত্রেয়ী,বিশ্বাস করো তুমিই সেই, তুমিই সেই
তোমার ডানার উত্তাপে বাঁচিয়ে দাও নিজের বন্ধু প্রেমিককে।