বিবশ শরীরে
ঠিক যেন এক মৃত মানুষের মতো
পেছনের সবকিছু অহেতুক দেখি—
ধরে আসা সাদা কোনো কুয়াশার দেহে
আলোগুলো বিচলিত, কিংবা অজানিত—
মলয় বাতাস আর দুপুরের ছায়া
কবে যেন ঢেকে গেছে গহিন নেকাবে
প্রিয় গাছগুলো চাঁদের মতন দূরে—
যেন বুদ হয়ে গেছে বিবশ শরীরে—
কুসুমিত ব্যথা আর ক্ষতদের কাছে
ধীরে বয়ে যায় পরিযায়ী বাতাসেরা—
রাতগুলো সব চুপচাপ জল হয়ে
পড়ে থাকে পথে—যেন অনেক গোপনে
সব শোক বেঁচে আছে ঘাসের কিনারে—
অথবা সকল অনিচ্ছুক ইশারায়—
দায় কিছু সামুদ্রিক
মাঠগুলো সব গড়িয়ে গিয়েছে সাগরের দিকে
অফুরন্ত চরাচরে, অথচ কোথাও দেয়ালেরা
নরম রঙিন শিমুলেরা—ছিঁড়ে ফেলছে গোপনতা।
ঠোঁটগুলো নিভিয়ে রেখেছি; আরও দূরে চারপাশে
ভেঙে যায় চাঁদ যত ধীরে—মৃদু কাঁপে ধ্রুবতারা—
ঠিক তত অবসরে—হিম ছায়ায় বেঁকে যাওয়া।
বছরেরা চলে যায়—অনেক অনেক বছরেরা।
চোখ খুলে
গহিন মনের দিকে
নিখুঁত ব্যথার দাগ
চারদিকে সবকিছু নগ্ন হয়ে গেছে
চোখ খুলে তবু দেখি কিছুই ঘটেনি।
তুমি দৃশ্য হয়ে ভেঙেছ কেবল
আমি যদি তোমায় ডাকি
রঙিন ভোরে অনেক ভাবি
আঁধারে সব জল…
যেন শুধু ঝরেই যাচ্ছে
দেখছে না তো কেউ।
যেন তুমি অন্য কোথাও
যেন ধূসর ঢেউ।
তুমি দৃশ্য হয়ে ভেঙেছ কেবল।
তোমার স্মৃতির মুখোমুখি
সারি সারি চোখে আমি
যখনই দাঁড়াই—
শিথিল চুলের মতো ওড়ে
সব গহিন হৃদয়,
আটকে যেন তোমার আদর
সারা শরীরটায়—
ঘাসের সঙ্গে শুয়ে থেকে
শিশির হয়ে যাই।
নিবিড় কোনো পাখির মতো
নরম হয়ে বুকের ভেতর
আর কিছু যে নেই…
তবু তুমি অন্য কোথাও
বুনছ তোমাকেই।
রাত গলিয়ে আমি তবু
ভালোবেসেই যাই…
বৃষ্টি নামার শব্দ ভুলে
হলুদ হয়ে যাই…
তুমি দৃশ্য হয়ে ভেঙেছ কেবল।
অনায়াস ভরে আছে…
অনায়াসসমূহ দূরের হয়ে থাকে
যেন তাকে নিকিয়ে রেখেছে পুরু কেউ
আড়ালে নামিয়ে।
কোনো মনোরমে সুবাসিত হয়ে গিয়ে
জানালার কাছাকাছি বাসনারা আসে
ঘুমের নরমে—
যারা শুধু ভেতরের দিকে ঢুকে যায়
সারি সারি ভরে ওঠে মামুলি হৃদয়
পশমের পাশে।
তবু সহজেরা দূরে থাকে, চাপা স্বরে—
যেন ঘুমায় রাতের অনুরোধে মৃদু নুয়ে
শরিফ মেজাজে।