ত্রিকোণমিতি
একটা সকাল চলে যায় প্রতিদিন
আমাকে অতিক্রম করে, হুইসেল দিয়ে—
আমি তখন ঝরাপাতার ভঙ্গিতে
তোমার দিকেই ছিঁড়ে পড়ি যাবতীয় অবসর নিয়ে,
কুড়িয়ে পাওয়া ডানাভাঙা রোদের দিকে
তুমি যখন আঙুলে ইশারা করো,
আমি তখন বিভ্রান্ত—
দিকশূন্য গতির কাছে সহসা ঋণী থাকে যে আয়ু
তাকে পরমায়ু ভেবে ঝুলে পড়ি থোকা থোকা
ডাল থেকে।
আমাকে কুড়িয়ে নাও, তুমি এইবেলা—
ঝরা পাতার ত্রিকোণমিতি ভেঙে।
ডাবল ডেকার
তোমাদের ভিড় আর
বিকেলের যানজট—গলে পড়া ফোয়ারার
প্রস্রবণ আড়াল করে নড়ে ওঠে।
সভ্যতার নিরুত্তাপ মুখোশের মাঝখানে
সমস্তই যখন মামুলি,
তখন বহু জানালার ওপাশে
আহত হাওয়ার কাছে ডাক আসে—
শহরে জেগে ওঠে অরুন্তুদ
বিআরটিসির রক্তিম ডাবল ডেকার থেকে।
নীল স্কার্ফ
আর যদি ফিরে না আসো এদিকে
এই শিমুলতলী, মেঠোপথ—
চরের অন্ধকার ভেসে যাবে মৃত্যুর নীল স্কার্ফে;
বাতাস ভারী করা সন্ধ্যা কেটে-কেটে
সম্মোহনের সুর আসে মাঝে মাঝে।
তোমাকে বলিনি যদিও
বুকের মরাডালে ঝুলে থাকে যে শেকল
নদীর চেয়েও বহু দীর্ঘ আমার মৃত্যু বরাবর।
শুধু বিসর্জনের এই মাঠে অচেনা স্মৃতির কাছে
ফিরে আসে বিষাদের বালিকারা!
আশ্চর্য কুমকুম
তোমার নৈঃশব্দ মুখর হলে আজকাল
আমাকে তুমি নিরস্ত্র শব্দের ছিন্ন কংকালে
ফেলে রাখো একা-একা,
দেখতে দেখতে স্থির কোনো বিন্দু থেকে
উড়ে গেলে তারা
নির্জন আকাশগঙ্গার চেয়েও স্তব্ধ হয়ে ওঠে মন।
বেভোলা মাটির বুক থেকে শুষে নেই
আশ্চর্য কুমকুম—
দূরত্বের পাঠক্রমে তর্জমা হতে থাকি
আঁধারে একাকী।