আমার প্রেম আমার কবিতা
আমাকে খুব বেশি আঁকড়ে ধরেছিল জীবনানন্দ দাশের প্রেমের কবিতাগুলো। বার বার পড়েছি। এখনো পড়ি। আমার কাছে প্রেমসম্পর্কিত বিষয়ে একজন কবিকে খুব বেশি ‘বোকা’ মনে হয়। মনে হয়,তিনি ঘটনা বানিয়ে বলছেন অথবা কাহিনি খুলে বলতে পারছেন না। না পারার অনেক কারণ আছে। আমি তা উন্মোচন করতে চাই না। থাক না কিছু রাখ-ঢাক! শহীদ কাদরী’র কাছ থেকে শিখেছি, কবিতার ব্যাখ্যা দিতে নেই। আর তা যদি হয় প্রেমের কবিতা! জিজ্ঞেস করতেই শহীদ ভাই বলেছিলেন-‘বিলকুল নেহি ভায়া!’আর কথা বাড়াইনি। আমি কি প্রেমের কবিতা লিখি! লিখতে পারি! আমার সব প্রেম একদিন মিশে গিয়েছিল জীবনের অন্বেষণে। আজও জীবনকে খুঁজি। মনে হয়, একমাত্র বনবাসেই প্রেম ও বিরহের প্রকৃত মসৃণতা।
দেনাগ্রহ
চাইনি যদিও,তারপরও দেখা হয়ে যায়। তোমার
সড়ক এসে মিশে যায় আমার রাজপথে, মৃদুভোর
ডেকে বলে তুলো হাত।ডাক দাও প্রতিবেশী জন-
মানসের রক্তিম বিভায়।
অনুক্ত আঁধার কেটে বয়ে যে ঝরণাধারা
কিংবা পথের বিলবোর্ড পড়ে যে মন ঘরে,
ফিরে আপন আয়নায়,তার কি পরিপূরক
কোনো গন্তব্য থাকে ? হয়তো থাকে না।
না হলে এমনভাবে পথে পথে
কেন হবে সব লেনা-দেনা !
পারদপৃষ্ঠা পাঠে
ফ্যাকাশে মমির নীচে সারাদিন খুঁজেছি চাঁদ। দিনে লুকোয় কোথায়
এই ভেবে সেরেছি সব সমীক্ষা।এবং প্রতীক্ষার সূর্যকে তালাশ করেছি
রাতভর,এখানে আগুন থাকে-জানার পর হাত দিয়েছি অন্ধ আগুনে।
পিপাসিত সমুদ্রকে বলেছি,শিখে নিতে শুদ্ধ রসায়ন।
জ্বলে ওঠো অনুপম,এবং জ্বালাও
আর যারা যেতে চায় জলে- প্রেমকলসি কাঁখে
পারদপৃষ্ঠা পাঠে তাদেরেও সাথে নিয়ে যাও ।
গৌরবের আমূল বর্ষায়
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে পাখিরাও গোছায় পসরা। ছেড়ে যাবে এ নগর
এই ভেবে ঝেড়ে নেয় পালক। তারপর দল বেঁধে ভর
করে মহান আকাশে।নীল প্রান্তের পলিমাটি, তারাও নরোম
পায়ে মেখেছিল গৌরবের আমূল বর্ষায় প্রথম ।
আমাদের নিজস্ব কোনও বর্ষা নেই , ছিল’ও না
কোনোকালে।যদি থাকতো তাহলে ভাসার কামনা
নিয়ে শিখে নিতাম সাঁতার, উভয়েই আষাঢ়ি আগুনে
ভেসে যেতাম হাত ধরে সিক্ততার স্বরূপ বুননে !
বুনতে কে না ভালোবাসে ? কেউ তামার তাঁত হাতে
নিয়ে যদি খুঁজে শিল্পগুণ, সেও জেনে যাবে এই রাতে
চুম্বনচূর্ণগুলো কখন পেয়েছিল প্রথম, প্রেমের চিহ্নদাগ
কিভাবে চন্দ্রায়নের তৃতীয় প্রহরে ঝরেছিল বর্ষাপরাগ।