জোড়াচোখের ভুল
স্বপ্নরা খসে পড়ে অভিমানের জীর্ণপাতায়,
উড়ে যায় বিবাগী হাওয়ায়,
চাইলেই রাখতে পারতে
তোমার মনের দাওয়ায়।
মেঘেরা নির্জনে খেলে লুকোচুরি
প্রকৃতি-মায়ারা দেয় হাতছানি
বেহায়া বাতাস শিস দিয়ে যায় কানে কানে।
তুমি ছিলে হৃদয়ে
ভালোবাসার সাদা ক্যানভাস
ইচ্ছা হলেই তোমাকে এঁকে দেখাতাম মনোভাস।
কিছু অভিমান,
ঘাসের বুকে জমা ভুলগুলোর মৃত্যু হয় হৃদয়ে,
তবু ও কিসের ব্যথায় ছটফট করে ক্লান্ত হৃদয়টা।
প্রিয়মুখ
চেনা কন্ঠ ভিজিয়ে দেয় মনোবরষা।
বীজগনিতের মতো জীবন…
তুমি ছিলে
জীবনানন্দের রূপসি বাংলা,
আয়ুব বাচ্চুর ‘সেই তুমি, শরৎয়ের পরিনীতা’
তোমাকে খুঁজেছি শহরের অলিগলিতে,
তোমাকে খুঁজেছি
লেপতোষকের ভিড়ে,
তোমাকে খুঁজেছি
শুধু বাতাসে মাখবো বলে যুগলরোদ…
কতদিন তোমার অপেক্ষাই…
তুমি আসবে;
আবার হুডফেলা রিকসায়
ঘুরব দুজন,
টং-চায়ে ঠোঁট ভেজাব,
শব্দের খামে লিখব কবিতা,
হাত ধরে দেখব পাহাড় নদী।
দরজায় কড়া নেড়ে জানান দেবে সূর্য,
প্রতিদিন বিকেলের সূর্য হাসবে
আমাদের প্রেম নিয়ে।
ইচ্ছাগুলো
চোখের পাতায় ভিড় করে আছে,
চকবাজারের গলির রাস্তায়
ডাক পিয়ন আর আসে না।
এখন আর পোস্ট অফিস নেই,
নেই হলুদ রঙের খাম,
বাড়ির ছাদে কার্নিসে বসে
পড়া হয় না চিঠি,
বার বার দাঁড়াতে হয় অপরাধীর কাঠগড়ায়….
দোষ কি শুধু আমার?
যা কিছু ছিল ফুল,
সবই কি ছিল জোড়াচোখেরর ভুল?
নির্বাক প্রতীক্ষা
বুকের নির্বাক রোদনের অর্থ বোঝো না
সেখানে মহাকালের কাব্য লেখা হয়।
রচনা হচ্ছে শত-শত গুচ্ছকবিতা
তুমি যেন ছুঁড়ে ফেলে দিলেই বাঁচো।
তোমার ভালোবাসার পাপে আবৃত করেছি নিজেকে।
আমার ভালোবাসা নেহাতই ছেলে খেলা তোমার জগতে।
একদিন না হয় এসে তুমি ঘুরে যেয়ো আমার শহরে।
দেখে যেয়ো, প্রতিটি দীর্ঘশ্বাঃস ছেড়ে তোমার জন্য অপেক্ষায় থাকা আমাকে।
ভালোবাসা বোঝার মতো অবস্থায় কি কোনো দিন ছিলে?
আজও কেমন নির্বাক হয়ে তোমার প্রতিক্ষায় আছি।
বৃক্ষহীন ধূসর প্রান্তর
যেভাবেই বেঁচে থাকি না কেন?
আছি নত
যদিও বুকের ভেতর চিনচিনে এক ব্যথা
অনুভূত হয় অবিরত।
কুরে কুরে খায় স্বপ্নহীন রাতগুলো
যাপিত জীবনে আশা-নিরাশার দোলাচলে
বড়ো অর্থহীন আমাদের পৃথিবী!
পাতাঝরা গাছের মতো দাঁড়িয়ে থাকে শূন্য দিগন্তে।
কখনো শুকনো নদী কখনো বৃক্ষহীন ধূসর প্রান্তর।
হয়তো বা কখনো আগাছা পরগাছাহীন কিংবা প্রাণহীন ঝরনাধারা।
প্রবহমান জীবন থেমে তো নেই চলছে তবুও
একবুক দীর্ঘশ্বাস নিয়ে । আমি এ নাট্যশালায় গিনিপিগ মাত্র। চলেছি নীরবে, চলেও যাবো
শেষ গন্তব্যে, থেমে থাকবে না প্রকৃতির নিয়ম।
শুনুন সৈয়দ শামসুল হকের পরানের গহিন ভিতর