মন পবনের নাও
ধ্যাত্তেরি ছাই! ভাল্লাগে না!
মন বসে না কাজে,
কেমন যেন আকুল-বিকুল বুকের ভেতর বাজে।
আকাশজুড়ে যখন ফোটে রাত-তারাদের হাসি,
মিষ্টি হেসে পাহাড় বলে, তোমায় ভালোবাসি ।
তখন যেন বুকের ভেতর ডাক দিয়ে যায় কেউ,
সাগরজুড়ে নাচতে থাকে জলপরীদের ঢেউ।
মাথার ভেতর ইতল-বিতল মাদল বেজেই চলে,
ফিসফিসিয়ে তখন যেন বাতাস কথা বলে,
বলছে যেন, আয় না রে তুই কিসের এত কাজ?
তারচে’ বরং খোল না মেয়ে একলা পথের ভাঁজ!
ছন্দছাড়া
হয়তো ভাবিস আমিই কেবল থমকে আছি
আমিই কেবল আটকে আছি ঘুড়ির মতো
সবাই তোরা এমনভাবে বদলে গেলি
দমকা দিনে আমার কেমন একলা লাগে!
জানিসই তো আমি কেবল আঁকড়ে থাকি
পুরনো দিন, পুরনো গান বুকের ভেতর,
হাতের মুঠোয় ইচ্ছেপাখির নীল বেদনা
আমায় যেন বোকার মতো ডুবিয়ে রাখে।
হয়তো বা তুই সুদূর হয়েই ভাল আছিস
চারপাশে তোর আকাশছোঁয়া দেয়াল তুলে
অভিমানের ঘুলঘুলিতে দু’চোখ রেখে
হারিয়ে যাওয়া তোকেই খুঁজি, পাই না খুঁজে!
ভুলবি যদি, ভুলেই থাকিস, ভালো থাকিস
আমি কিন্তু দূরে এসেও তেমনি আছি
আজও নিবিড় সেই ভুবনে একলা হাঁটি
কারণ আমি আটকে আছি সেই-ই সময়ে।
চাঁদবেনে
খুব তো গমক দেখাও!
বদরাগি ঢেউয়ের মতো
বারবার ছুটে যাও সাগরের কাছে।
ও বণিক, তুমি শুধু বাণিজ্যই জানো!
তুমি জানো রাজ্যপাট,
তুমি চেনো কত দূরে কোন্ বাঁকে মুদ্রাদেবীর হাট!
কড়ির সুনাম জানো আর জানো
কড়ি কীর্তন-
চাঁদবেনে, তুমি তো জানো না
তৃষাতুর হৃদয় কতো একরোখা হয়!
উপেক্ষার আগুনে জ্বলে মনসারা কত বেশি
ঈর্ষাপ্রবণ হয়।
বণিক, তুমি শুধু পণ্যের বেসাতিই জানো
জানো নাকো দুর্লভ তাঁতের বয়ন
ভাবোওনি কখনো পদ্মার বিষের ওজন
একরোখা চাঁদবেনে, পরাভূত হও তবু মনসার জেদে…
গাঙুরে ভেসে যায় লখাইয়ের শব
বেহুলা-বসনে ভাসে দেব-কলরব।
আরও পড়ুন: রফিকুল ইসলাম : পৃথিবীর মানচিত্রে এক ভাষাপ্রেমিকের মুখ ॥ শাহানা আকতার মহুয়া