আমাকে ধারণ করো
আমাকে ধারণ করো পেটে,
তাবৎ পৃথিবী পায়ে হেঁটে
আলো আঁধারের উপকূল,
আবার জন্মাবো মহাভুল।
ও-জঠরে ধরো প্রিয়তমা,
আমার সমস্ত রাখো জমা
লক্ষ এককের জল-বিন্দু,
আবার জন্মাবো মহাসিন্ধু।
আমাকে বানাও মহামায়া,
নাক-কান-দেহ-মুখ-কায়া-
হৃদয়-সমেত বাহুবলী,
পুনর্জন্ম আসুক কেবলই।
আমারই ঔরসে বারংবার
আমারই অসহ অহঙ্কার
যথাযথ কোথাও না-কেটে
আমাকে ধারণ করো পেটে।
সম্বল
একটাই ফুল; ঘুরে-ফিরে গাঁথি মালা-
মালার লকেট
একটাই জামা; ঘুরে-ফিরে হাতড়াই-
জামার পকেট
এক ফুল এক মালা, মালার লকেট
ভ’রে থাকে তাই দিয়ে জামার পকেট
সারাদিন সাপের দোকান
সারাদিন হাসিমুখ সাপের দোকান,
ছোট-বড় চার কোণা ঢোপের সোপান।
সরু-মোটা কিলবিল বিষে ভরা সাপ,
ফোঁস ফোঁস; এসো শোনো স্বপন-আলাপ।
বীণে নাচে কালো নাগ হেলিয়া দুলিয়া,
জীবন মোহিত তার বাঁশরি শুনিয়া।
নাচনে নাচনে ফোটে স্বভাবের ফণা,
তবুও পাবে না কামড়ের সম্ভাবনা।
গোল হ’য়ে এসো লোক এসো কোটি কোটি,
সাপের দোকানে নেই কোনও বড়ি-বটি।
কেবলই শেষের সাপ তোমাকে ভোলাবে,
কিছুটা সময় দিলে ফণাটা দোলাবে।
এই ফাঁকে ভুলে তাকে, স্বপনের দাওয়া
মুঠি খুলে ধ’রে নাও ও আদম-হাওয়া।
পাখির মতো মানুষগুলো
(আমি যার অধিকার হরণ করেছি, ক্ষমা নয়, আমার কলিজা কুরে খাও)
আয়না নিয়ে বায়না করো? করো।
পাখির মতো মানুষ দেখো? দেখো।
নিজের দিকে মত্ত থেকো নাকো,
পাখির দিকে তাকিয়ে থাকো, সোনা!
চঞ্চুগুলো ক্ষুধার্ত ও ধার,
পায়ের ভাঁজে পাথর আঁটা আছে।
ওই পাখিরা পাখিই বটে, ভাই।
তবুও কেউ বসছে নাকি গাছে?
উড়তে গেলে দিচ্ছো বেড়িবাঁধ,
বন্দুকটা বসতে গেলে তাক।
থাক ভাইয়া, থাক, ইতিহাসের
কী শিখবেন না শিখবেন থাক;
আবাবিল তো পাখিই ছিল নাকি?
আবাবিল তো অতি ক্ষুদ্র পাখি,
পাথর এনে বৃষ্টি দিয়েছিল।
তোমার নদী
তোমার নদী আমার বুকে বন্যা ডাকে ক্যান?
কন্যা ওগো, মধুর মতো তরল আরও আছে।
জলের বুকে নিত্য সুখে আগুন জ্বলে ক্যান?
হাওয়ার মতো বাষ্প ভারী উড়তে থাকে ছাঁচে।
কন্যা ওগো, বন্ধ আঁখি খুলতে পারো যদি,
দুধ টিপলে টেপা যায় না, জমলে হবে দধি।