একটি কবিতার অপেক্ষায়
একটি কবিতা জন্মের অপেক্ষায়
অতৃপ্ত ষড়ঋতু দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়
আমলকী ডালে অপরাহ্ণ লেগে থাকা
উত্তোরে শীত বাতাস কবিতার কলকব্জা হতে চেয়ে
সন্ন্যাসীর মতো বিরস মুখে বসে রয়
বটফলে দীর্ঘ চুমুক দেয় ক্লান্ত ফিঙে;
সনাতন বাড়ির কিশোরীরা
প্রাচীন পুকুরের সবুজাভ জলে
ফুল চন্দন ভাসালে সূর্য-প্রণাম সেরে
টলটলে জলে নবীন কলমীর ডগায়
লতিয়ে ওঠা কবিতার লাইন
শামুক ঝিনুকের বুকে পথ হারায়।
একটি কবিতা জন্মের প্রতীক্ষায়
জেগে থাকে অনাহারি প্রেম
অবিরাম ক্ষরণ, দহন যন্ত্রণা
অভুক্ত কত চাঁদ রাত
পৃথিবীর যত স্বাদ, বেদনা ও রিক্ততা
পারে না নামাতে তাকে কবিতার খাতায়—
কেননা সব প্রেম নিয়ে গেছ তুমি
সবুজ নিম ফলে মালা গেঁথে।
চুয়াডাঙ্গা কলেজ
কোনো কোনো দিন জরুরি কাজ
পড়ে থাকে টেবিলে—
সম্পাদকীয়তে সর্বশেষ তথ্য সংযোজন
বিশেষ সংখ্যার চাপ
লেখা এডিট, পেজ মেকআপ
সব কিছু পাশে ঠেলে
হুড় মুড় করে ঢুকে পড়ে চুয়াডাঙ্গা কলেজ
স্মৃতির জানালা গলে;
ঘাসে ঢাকা মাঠের প্রান্তে
কৃষ্ণচূড়া কড়াইয়ের উদাস প্রশাখা,
নবীন বরণ উৎসব
মোহিত স্যারের বাংলা ক্লাস
রাজ্জাক স্যারের অর্থনীতি, ফোর্থ সাবজেক্ট
মর্তুজা স্যারের পৌরনীতি ক্লাসে
ব্যাক বেঞ্চে শ্রীময়ী ছন্দার ফিসফাস
নতুন প্রেমপত্র পাওয়ার গল্প;
এমনকী ভোরের রোদে তরঙ্গ তোলা
শীর্ণ মাথাভাঙ্গা নদী, হাসপাতাল রোড
পাবলিক লাইব্রেরি
মন্দিরাদের সদর দরজায়
ছাদছোঁয়া বাগান বিলাসে লেগে থাকা
রোদের প্রলেপ, গৌরী বৌদির ঝকঝকে রোয়াকও
লোকালয়ে নেমে আসা
চেরাপুঞ্জীর মেঘের মতো
গ্রাস করে আমায়।
কি-বোর্ড সিপিউ মনিটর মাউস
যেন দূর প্রান্তরে হানাবাড়ি–
থমথমে নির্জন পড়ে থাকে
টেবিলের কোণে,
আমি ডুবে যাই আমি ভেসে যাই
চুয়াডাঙ্গা কলেজ, চুয়াডাঙ্গায়।
কোনো কোনো দিন ভীষণ এমন হয়…