চাঁদ
এখন বিষণ্ন রাত—নেমে আসে ঈগলের মতো
নখের আঁচড়ে মেঘ ছিঁড়ে খায় প্রেমিক হৃদয়
বাতাসে সেতার বেঁধে তুমি কেন ভুল সুরে গাও?
প্রান্তরে এসেছ ফেলে রূপার মাদুলি
জিনের আছর ভেবে শুনেছিলে মাতালের গান?
পায়ে পায়ে মেপে পথ লাল-নীল মিথের ভূগোল
পেছনে এসেছ রেখে।
মরানদী ঢেউ তোলে যদি পায় বাউল হৃদয়
একতারা টুংটাং—সুরে তবু মোহিত দুপুর!
তোমাকে শোনাব বাঁশি—ভুল সুরে কাঁপুক রজনী
অন্ধ চাঁদ ঝুলে থাক, ভুলে যাক আলোর গরিমা!
ঘুমোতে যাওয়ার আগে
আমাদের মগজের ডান পাশে তুমুল রাতের শিস দিয়ে
একটি ক্ষুধার্ত বাঘ খুব প্রজ্ঞায় হাঁটেন, আর অন্ধকারে
হৃদয়ের আলো জ্বেলে ভয় দেখান কেবল
অথচ, এই প্রেমিকা একদিন খেলাচ্ছলে নিজের আঙুল
কেটে রেখেছিলে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে।
আমরা যারা নিজের চোখ আর হাতকে বিশ্বাস করি না
যারা বহুবার নীল সূর্যের বরফ গলতে দেখেছি
তারা কেউ নিজেদের মুখ দেখতে চাইনি।
নিজেরা কতটা বাঘ;
কতটা ঘোলা পানিতে তীব্র ঢেউ তুলে পান করি…
এসব প্রশ্নের কোনো জবাব খুঁজিনি।
তবে, শেষবার খুব সূর্যরাঙা মেয়েদের কোমরের জলে
আস্ত একটা হাঙর দেখে হেসে উঠেছি প্রেমিক!
একাকী জীবন
কিছু জীবন কেঁচোর মতো—কেবল বেঁচে থাকে
কিছু জীবন মানবেতর—কষ্টে কাটে সমস্ত রাত,
দুঃখের কথা শোনার মতো কেউ থাকে না।
একলা রাতে বসে বসে খুন করে তাই আপন হৃদয়।
খুন করে সে মনে মনে—
আকাশ তোমার রাত্রি জাগার নীরব সঙ্গী, চাঁদও?
হয় না এমন—একলা ঘরে বেঘোর তুমি পড়ে আছ?
তোমার পাশে পিঁপড়াগুলো, তেলাপোকা তোমার নাকে
দিচ্ছে কেমন কুসুড়সুড়ি?
একপৃথিবী মানুষ তবু—তবুও তুমি একলা ভীষণ?
নিজের সঙ্গে নিজের কথা বলছো তুমি; কেউ শোনে না
শুনবে না কেউ তোমার একার দুঃখগাথা।
একলা থাকো, সঙ্গী তোমার কীটপতঙ্গ সঙ্গী অন্ধকার
ইচ্ছে হলে বেছে নিও অনন্তপথ, ইচ্ছে হলে…
জীবন তোমার হাতের মুঠোয়—মেঘলা আকাশ চাঁদও
মোমের মতো গলতে থাকা দিবস কিংবা রাতও!