প্রতিহিংসার পৃথিবীতে
আমি এভাবেই একলা হতে থাকব আর
যেইদিকে হারিয়ে যাব,
কোনো কোনো দিন তোমরাও জড়ো হবে সেইখানে;
আবার মিলিত রঙে, স্কেচ হবো আমরা!
এইভাবে একলা হবো আমি।
রক্তের ভিতর থেকে লোহিত কণিকা হেসে
জিজ্ঞেস করবে, ‘কবি, ভালো আছ না কি?’
আমার হাত দুটি একে অন্যের দিকে
সংকোচে তাকাবে, ‘কতদিন জানালা খোলোনি, বলো!’
প্রতিহিংসার পৃথিবীতে
গান মানে ঘৃণা ভুলে থাকা, হেমন্ত মানে
চাষাদের আত্মহননও বটে!
আরো একা হতে হতে ফুল জংলা পাহাড়ে পাহাড়ে
ঘুরে যাবো, দূরে যাবো; পাঞ্জাটা ফেলে রেখে পুড়ে যাবে
সমস্ত হাতের উদ্যম!
ধানের চিটা
আর ক’টা দিন হেমন্ত বরাবর
মেনে নিবো সব হাওয়া!
সহকর্মীর ঠাট্টা উপচানো হাসি, মেনে নেবো আর ক’টা দিন।
তারপরে ধানের চিটা, খড়ের বিচালি গায়ে
যেনতেন মাখামাখি হয়ে, থেকে যাবো আমি
গাঁও গেরামে, যেখানে ক্ষুধাও কবিতা-কথা
ঘাম ঝরে হিম হয়, কৃষাণীর গা!
আমাদের সময় নগণ্য, মিথ্যাও প্রসাধনী আজ
যার বুকে গানের তাড়না থাকে, তার দিকে অজস্র তির
ছুটে যায় সমাজ-ধারণা হতে!
ঘুড়ি ওড়ার দিকে
এবার একটা ইউটার্ন নেবো
একটা ঝরাপাতার গল্পে ঢুকে, প্রচণ্ড বর্ষা হয়ে
ফিরে আসবো বন্দের মাঠে-
অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে থাকবো ঘুড়ি ওড়ার দিকে!
ভেতরে অনেক ভিড়, এতটাই যে নিজেকে দেখতে
পাচ্ছি না আজকাল।
একটা ইউটার্ন নিয়ে ছেড়ে যাবো মৌতাত
আমার তো বাম হাতে ঘড়ি,
সময় দেখে শেষ করবো জগিং!
যে তার সময়কে দেখতে পারে
সে তার আত্মাকে দেখে, ঠিক কোথায় নিয়ে তাকে
বসিয়ে রাখা যায়, জানে!
তাঁতফুলে ভর্তি একটা চাদর গায়ে, নদীর ধারে হাঁটবো;
সামনে কাশফুল থেকে সরে যাবে শেষের বিকাল;
সামনে মিলের শ্রমিক,
ঘাম মুছতে মুছতে পেরিয়ে যাবে ওভারটাইম, পুত্রের আব্দার!
আঘাত
আমাকে আঘাত করছে মেঘ, হসন্ত খোলা রোদ;
তোমার, দোয়া়ত চোখের স্মৃতি!
হেমন্ত ফুরানো ডালে পাতা হয়ে দুলছে
অনুজের ভর্ৎসনা।
আর, শূন্যতাকে পাশে নিয়ে যে কোনো দরোজায়
কড়া নাড়া জগতের কঠিনতম যুদ্ধ,
যে সকল আঘাতের দাগ ভণিতা করতে শেখায়
আর যত ভাষার লাবণ্যে তুমিও কাজলটানা!
আজ সব মনুষ্য ভণিতার কাছে আমি
শূন্য ও পরাহতপ্রায়!
সব শেষে মানুষের চাই ফুল, তাজা ফুল,
নিজেদের কফিনে।