গোপন দরজা
দেখা হয়নি কখনো, অধচ তোমার প্রতিবিম্ব
দেখি জলের ছায়ায়। হাত বাড়ালেই পেতে পারি
দুই হাতের পরশ। চাঁদজ্বলা রাতের মেঘেরা
নরম বাতাসে উড়ে যায় দূরে বেদনার সারি
খাঁচা ভেঙে পালানোর আগে পাখি যদি ডেকে ওঠে
বিমর্ষ গোলাপ কেন নেশায় আকুল? তবু আছি
বুকের জমিনে প্রেম আরও নিবিড় হয়ে আসে
আমাদের স্বপ্নলোক ঘিরে কারা থাকে কাছাকাছি?
খড়কুটো ও নরম ঘাসের চাদর খুলে খুলে
রাখাল বালক এসে সামনে দাঁড়ালে
আকাশও কেঁপে কেঁপে সরে গেলো মেঘের বাসরে
হৃদয়ের দাবি নিয়ে দুহাত বাড়ালে।
হাঁটার সময়
ঘুম না আসা অভ্যেস, জেগে থাকা নয়;
তারপরও সময় নিরুত্তাপ কাটে
দহনে পোড়ায় কতটুকু; জানা নেই
তারও অধিক
হাঁটতে চাইলে পথ, তবে তুমি হাঁটো
পেছনে ফেরার সময় এখন নয়;
ডাকপিয়ন
ডাকপিয়ন হবি?
হলুদ খামে ভরা চিঠি পৌঁছে দিবি মেঘের বাড়ি
খামের ওপর কালো বর্ণে লেখা—
মেঘের ঠিকানা।
মেঘ থাকে তো দূর আকাশে। মেঘেরা তিন ভাই।
কালো-সাদা-তুলো।
কালো মেঘকে দিবি চিঠি।
বলবি যেন যত্ন করে পড়ে;
চিঠি আমার পৌঁছে দিবি নীল-সমুদ্রে,
বলবি তাকে:
নির্যাতিতার চোখের জলে ভেসে গেলে নদী
নোনা জলে বাষ্প হয়ে মেঘে উড়ে যায়,
মেঘ হয়ে যায় দুঃখগুলো, বৃষ্টি হয়ে ঝরে।
শ্রাবণধারায় যায় ভেসে যায় বাবার চোখের জল।
সাদা খামের চিঠি দিবি দূরের পাহাড়টাকে
বলবি তাকে:
আকাশ আমার নেই ভালো নেই;
কষ্টগুলো জমতে জমতে বুকের ভেতর পাহাড়।
শিলাবৃষ্টি আছড়ে পড়ে আশ্রয় দিবি তাকে!
বেদনার নীল চিঠি দিবি বিবেকের ঠিকানায়
বলবি তাকে:
গণতন্ত্র ঢেকে গেছে স্বৈরতন্ত্রের জালে
কলুর বলদ টানছে কেবল নীতির নামে সকল দুর্নীতি;
ইচ্ছে হলে, চলে আসিস,
দূর পাহাড়ে—যখন আঁধার নামে
তোরই হাতে পাঠিয়ে দেবো আবার
দুই-চারখানা চিঠি এবার দুঃখভরা খামে।