গামছা
ভেজা গামছাটা ভেজাই থাকতো যদি
হাত মোছা, মুখ মোছা অই ভেজা
আমি কী ছুঁয়ে দেখতাম তারে?
ডোরা ডোরা হলুদের খোপে
নিঃশ্বাস লেগে থাকতো যদি ছোট ছোট
মনিপুরী অই গামছায়
শীতের ঢালুতে গরমের দিনটারে
কেন রাখতে চাই
দেয়ালে ঝুলায়া
কেন আধা আধা ঘুমের পাতা
জড়সড় জেগে থাকে
অচেনা মাঠের ঘাসে
তার জন্য মায়া হয়
বনতিতিরের
কেন
একটা কেন আইসা জ্বালাতন করে
হররোজ সন্ধ্যার আগে!
কিছু নাই তবু
অফিসে তুলনামূলক বেশি যোগ্যতা নিয়া বেশি কাজের পরও
মায়না কম, কোনো অভিযোগ নাই
বন্ধুরা মনের সময় নিয়া পলায়নরত
কোনো অভিযোগ নাই
প্রেমিকারা একে একে আয়না ভাঙে
কোনো অভিযোগ নাই
অভিযোগ নাই ছোট-বড় জ্বরের বিরুদ্ধে
অভিযোগ নাই মাথার চুল না থাকা নিয়া
দুপুর ঢইলা যাওয়ার পরেও
ক্ষুধার বিরুদ্ধে নির্বিকার থাকি
আস্তে ধিরে ভাত বসাই। জমাট মাছের টুকরা পানিতে ভিজাই
ওই পানির বিরুদ্ধে মাছও কি অভিযোগহীনা
এইসব ভাবি আর
পিঁয়াজের কুচি করি
মুখোমুখি বইসা বটির।
তবু
ভেজা চোখের বিরুদ্ধে
কবরের মাটির বিরুদ্ধে
অভিযোগ করবো না কভু।
প্রেম দিও, বিরহও দিও
এ কেমন দিল দিলা খোদা
প্রেম নাই, বিরহও নাই
অন্ধকারে দুলতেছে
রক্তিম জবা
ওই জবারে বল,
কিছুটা রঙ আমারেও দিতে
ও খোদা এক
মাইনা নেওয়া ধারণা গো
আমারে গরিব করো, নিঃস্ব করো আরও
তবু অই মগজের ভাঁজে
দুর্বল দ্বন্দ্ব দিও না
প্রেম দিও, বিরহও দিও!
পুরুষ পাথর
আয়নার সামনে দাঁড়ায়া আর
কাইন্দো না শিলু
আয়নার সামনে দাঁড়ায়া আর
একা হয়ো না
কেন ভেজাও বারে বার
ওই নির্লপ্ত পুরুষ পাথার
নাকফুল তোমার
ঝুলে যাওয়া বিকালে বরং
খুলে রাখো আমায়
খুলে রাখো সকল স্পর্শ
চিরচেনা গলার আওয়াজ।
পাখি তো যাওয়ারই ছিল
পাখি যাচ্ছে হাশরের মাঠে।
শূন্য
অন্তরের অই শূন্য গোলক
তবে কার
শূন্য নামে কে অই
শূন্যতা, কী কাজ অইখানে
তার। কেন সঙ্গ দেয়
তারও কিছু নিঃসঙ্গতা কিছু
আছে কি না,
ফুল ক্ষেতে বসে থাকলেই পারে
আইলে কী সুন্দর প্রজাপতি
বাতাসে সুবাস
এইরূপ আইলে বসিয়া
খেলা করো, আকাশে ছবি আঁকো
শুধু
এই স্পর্শকাতর শূন্যতায়
থাইক না হাহাকার হয়ে
এইটুকু জায়গারে স্বাধীনতা দাও।