খনার জুঁই
পুরনো শিশির খামের আল তোলা দাগের ছই
ছোট্ট চালা, মটকা জালার এই সামান্য ভুবন
গতর খাটা মন-মাঝির ফুটুক বড় নিশান খই
সংসার নৌকাফুলে ওঠুক জ্বলে নতুন স্বপন
নিজ ঘরে পাটাতনজুড়ে ওঠে ফুল সূর্যমুখী
হঁলা গাঁথার ভারী সুর কিংবদন্তির জোয়ার
নতুন সুতার বোলে ওঠে সুঁই বারমাসি ঝুলি
ঋতু কূলে ঋতু ভুলে কিছু কথা অশনি দুয়ার
এক নদী পাড় ভাঙে আরেক নদী ছড়ায় ঢেউ
তলে ভাঁজে দোল ওঠে পলির ফুয়ারা যায় দেখা
একদিকে বিষ ওঠে, কার্বন কণার বাষ্প মারে ঘেউ
ক্ষতের চিহ্ন বেশি যা টুকু সামান্য অলোক রেখা
বর্ষা ঝড়ে ঘরের বেতালে ফুঁড়ে পতঙ্গভ্রমণ
পিঁপড়ের দলা হয় ভারী সারি সারি ছুট
উচাটনে জলগাত্রে ক্ষীর ওঠে, নাঙা বমন
ঝিম মারা ভারি পরিবেশে, থাম করে মারে কুট
ব্যাঙের সর্দি ওঠে চারদিক দেয় বেনামি চিঠি
কত কথা, হয় কানাকানি নাফরমানি পাথার
দারিদ্র্যে যখম যারা স্বভাব দোষে হয় তারা জুটি
জ্ঞানবুদ্ধির জোরে কিছু বিনয়, ওঠে সুবোধ কাতার
মাটি ঘরে শান্ত বাতাস আসা যাওয়া করে ঠিক
ওই পাড়ে দেখছি কুলিন, নগর বিষের খেলা
মাঝেমধ্যে নিশ্বাসে টান ওঠে পাকাই তাল বেঠিক
গুজার ওঠে মনে, নিত্য নতুন খইপরানি মেলা
দিনে দিনে বাড়ে প্রণয়ের ফুল, খুলে ওঠে দাগ
রঙিন করা মুখে আজ ফোটে খই, টগর কষ
মাঝে মাঝে তিতাচোখ কঠিন অসহ্য লাল রাগ
চোখের সবুজ আঙুলে খসে গেছে সুবোধ রস
ভালোবাসার তাড়ি খেয়ে যারা গেছে অচিনপুর
তারাও বুঝে আমার মনীষা, প্রত্নকুলে দেই দোল
মাটির মরমে ওঠে কথাফুল বকুল বকুল
কতকিছুই তো আজ সংগোপন পেছন ভুল
প্রাণমাঝি, খোলা বড় প্রেমদিল শাশ্বতের লয়
সরলে বিশ্বাস করি, আছে রেডি নরম দেহঘাট
অতি আলোর ফটকা খেয়ে করবে না নয়-ছয়!
প্রাণ খুলে ফোটাই সুগন্ধি নরম চালের ভাত
আবার ফিরে পাবো মনের মতো সেই বারোমাস
পুঁজির ডেরায় বসে, তাও দেব খাঁটি দেশপ্রেম
লগ্ন করে সোঁদা মাটির বুক আড়াআড়ি শ্বাস
নতুন ক্ষেতের আলদাগ জানে সেই দিল হেম।
আরও পড়ুন: ছবি থেকে কবিতা