রাত্রিনামা
অনুপম সেই সন্ধ্যা, ওরা ভেবেছিল—অন্ধ আমি; তাদের চৌকষদল আমার গোত্র খুঁজে পায়নি। নামকরণেও ব্যর্থ হয়েছিল রাজপুরোহিত, আর, তাদের পাশে দাঁড়িয়েও নির্বিকার আমি, শুনছি—দূরে কোথাও ঘোষিত হচ্ছে তুমুল রাত্রিকথা!
এভাবেই লেখা হলো রাত্রিনামা- উপসর্গের আড়ালে!
আড়চোখে গোধূলি এঁকে ফিরে গেলে- বিদগ্ধ সারস, ভেবেছি বহুদিন—বিমর্ষ যে সন্ধ্যায় জন্ম হয়েছিল আপাত সত্যের, সেখানেও কি গোপনে লেখা ছিল অন্ধতার কাহিনি?
সভ্যতা সেঁচেও দেখেছি, চোখ থাকা সত্ত্বেও কেউ কেউ অন্ধ অজগর। সুতরাং, অনুপম সন্ধ্যায় ভাবনার আসমানে উড়ে যেতে দোষ নেই—
বৃষ্টিসত্যদিন
তোমার বিরহে যারা, নর্তন কুর্দন করে অবিরাম; ঋতুর গণিতে শুয়ে— তারা তা জানে না—গ্রীষ্ম নির্বাপিত দিনে, খুব ভোরে, শৈথিল্য পরিত্যাগ করে উঠে আসবে—নির্বিরোধী উৎসুক জনতা, যার সমর্থনে, সচেতন স্তব্ধতা পৌঁছে দিচ্ছি আমি—যেখানে গুচ্ছ ঘাসে ভরে আছে বোধের মিনার।
এ-এক বিস্ময়কর সৃজন, প্রশ্নবোধক সময় আর স্থির টেরাকোটা, গোল হয়ে থাকা অতল আঁধার—এই শান্ত জিজ্ঞাসায় চেপে দেখে নেবে শ্রাবণকুসুম!
ঋতুর জাগরণে আবারও ফিরবে—বৃষ্টিসত্যদিন, সড়কে সড়কে পৌঁছে যাক তারই প্রীতিসম্ভাষণ!
কামারশালা
অবশেষে, উড়তে উড়তে বৃষ্টিগুহা, সমতল ফুঁড়ে উঠে এসেছে চূড়ায়! গ্রীষ্ম ও শীৎকার পেরুনো উচ্চাশার পিঠে বসতি সাজাচ্ছে একুশ শতকের জড়ুল। মাথার ভেতর শত শত কাঠপোকা—সময়ের পিঠে বসে গান গাইছে—ধুরন্ধর হাওয়া; আর ক্রমেই বিকশিত হচ্ছে প্রেম চতুরতা!
তুমি কি দেখেছ, মাঠ-ঘাট-নদী পেরিয়ে ওঠা-নামা করছে প্রস্তুতির পারদ?
চারিপাশে দেখো, শান্তি ও অশান্তি নিয়ে বেড়ে উঠছে মেওয়াগাছ, শাখায় শাখায় অলিখিত পূর্বাভাষও দুলছে; তবুও গৌরচন্দ্রিকায় প্রতিভাত হচ্ছে তোমার মুখশ্রী—
নির্বিকার আমি, বরং আমাকেই দেখো—
অগ্নিপুষ্পের ধারণায় গড়ে তুলেছি যে সুসজ্জিত কামারশালা—সেখানেই, প্রতি রাতে অক্ষর পিটিয়ে অর্থবহ করা হয়—