মহিমার বাগান
তোমার বাগান স্পষ্ট ফুটে আছে।
ফুলগুলো তার দিচ্ছে পাহারা।
ঘ্রাণ-সুরভি ছড়িয়ে আছে দেহে।
দেহের মাঝে জগৎ-ফোয়ারা।
বাগান কিনা জগতের বিস্ময়!
দেহের সাথে অনেক সমিল তার
ব্রহ্ম এবং ভাণ্ড মিশে আছে
উজল প্রেমে একক, চমৎকার।
ফুলের নামে নাম
ফুলের নামে নাম।
আনন্দ ও জল।
তোমার বারান্দায় বাগানে
ফুটে আছে পুষ্প ও বাহার।
চমৎকার।
শ্বাস-প্রশ্বাসের মতন সুন্দর।
সমস্ত উজ্জ্বলতা লয়ে হাসছে।
ভালোবাসা তাপ পরিবাহী।
বিদ্যুতের উচ্ছ্বসিত হাসির মতন
ছড়িয়ে পড়ছে আমাদের বাসনায়।
শয়ান
তুমি ঘুমালেও রাত জেগে থাকে।
আলোঝলা রাতের বাগান।
রাতের বাগান জেগে থাকে।
শয়ানের পাশে।
পুষ্পের চাহনি ও হাসি নিয়ে।
হাসি মধুর এবং ছুরিখচিত।
যেকোনো সময়ে দিতে পারে ঘা।
ঘা বেদনাবাহিত।
ছায়ার মতন লেপ্টে থাকে বেদনা।
সযতনে যেকোনো সময়, এমনকি
তোমার ঘুমে হানা দিতে পারে।
ঘুম অনন্ত হরিৎ।
আমিও ছিলাম মহিমা বাগানে।
তোমার শয়ানে। প্রেমে।
সম্পর্ক
সম্পর্ক মধুর। প্রেমময় হলে নদীতরঙ্গ।
নইলে, ভাঙনে জেগে ওঠা চরের পরে
নদীতীরে ৪৫ ডিগ্রি ঢালের মতো।
যোগাবিহীন। তীরের সাথে চরের।
ভাবহীন। হাহাকারের।
আমাদের অ-জ্ঞানী ভাব বোঝে না
দেখা-না-দেখার প্রেম—
প্রেমের হাটের লীলা।
জাদু না জানলে কেমনে ভাব হয়!
দেহের ভিতর ব্রহ্মাণ্ড লুকিয়ে রয়।
জাগাতে হয় নিরজনে—
তারপর সিংহাসনে বসে
মায়া ও লীলায় হেসে—
ডুব দিতে হয়। রূপের আকরে।
পরমভাবে। নিরাকারে।
সম্পর্ক মধুর, অক্ষর, অজয়।
ছবি
ছবি নাই।
ছবির মায়া আছে।
ঢেউ হারিয়ে গেলেও
তার উচ্ছ্বাস ছেয়ে থাকে
সাগরময়।—
তীরে এসে বিঁধে থাকে।
মায়া ও আনন্দ।
ছবি নাই।
তুমি গেঁথে আছো।
গুপ্তধন, অপ্রকাশ্য।—
মহিমায়।
তোমার লাল মায়া ও দরদ আছে।
গোপনে প্রকাশ।
ছাদ
ছাদ হচ্ছে আকাশের পাটাতন।
আমার ছাদে তোমার বাগান বেড়াতে এসেছে।
তোমার বাগানে আমার ছাদ।
আনন্দে ছাদ ও বাগান হাসছে তারা হয়ে।
বাগানের প্রতিটি ফুলের নাম তারা।
আকাশের পাটাতন তারাময়!
তারার আলোয় ছাদ ও বাগান
আমাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখছে।
আমরা ঘুমিয়ে আছি—
আকাশ স্বপ্ন দেখি না!
করোনাকাল
একা আছি। বিচ্ছিন্ন।
তোমাদের থেকে।
আকাশ ক্রমশ উজ্জ্বল হচ্ছে।
স্বচ্ছ জলে সাঁতরাচ্ছে ডলফিন।
জেগে উঠছে প্রাণ ও লতাগুল্ম—
পুষ্প ও বৃক্ষ সবুজ মায়ায়।
আমি প্রকৃতিময়—
অবিচ্ছিন্ন মায়া ও মায়াবাতী থেকে।
বাতাস বয়ে যাচ্ছে অবিরত।
সূর্য ছড়াচ্ছে আলো।
আমরা প্রাণভরে শ্বাস নিচ্ছি।
আমাদের দূরত্ব ও ব্যবধান পেছনে ফেলে
আমরা অবিচ্ছিন্ন আছি প্রেমে ও পরমে।