এই ছবি যতবার দেখি
এই ছবি যতবার দেখি তত দেখি মেঘে মেঘে
উড়ে উড়ে ভেসে আসে গৌরিকা তরুণী
গভীর চোখের কুচকুচে কালো মণি
ভ্রূতে হাসে কবিতার রেখা
যেন ঢেউবতী নদী দূরে বয়ে যায়
পরান গাঁয়ের গান হয়ে।
ভাসানো তৃষ্ণার রোদ—দুঠোঁটে দুকূল
পলিমাটি অভিসার ব্যাকুল কিনার নদী ছোঁয়
ভোরের কাঁচারোদে ঢেউ খেলে সোনারঙ
মায়ার পাপড়ি যে কপোলে
মৃত্তিকা দেউলে জাগে কোন কাব্যধ্যানী।
রাতের কুয়াশাভাঙা—এই ছবি যতবার দেখি
দোচালা টিনের ঘরে নিশুতির কান্না
কী গভীর হয়ে নেমে আসে
তাঁতের শাড়িতে ছুয়ে থাকে অভিমান
সলজ্জ স্নানের দেহে ঘাসফুল সুখ
সুঘ্রাণ রমণীমুখ—বুকের জমিনে।
এই ছবি যতবার দেখি
অপার আকুতি টিয়েপাখি ঠোঁটে ঠোঁটে
মেঘের কপালে লালটিপ
ছবিতে যে এত রূপ
অবাধ্য আবেগী ঢেউ
উর্বরতার পোয়াতি
পলিমাটি
সবুজ দীঘল রেখা বুকের গভীরে টেনে নেয় ।
এই ছবি যতবার দেখি
জয়নাবের অসহ্য রূপের আগুন
পদ্মাবতীর লালাভ ঢেউ খেলে শরীরের খাঁজে
বুকে ভরে থাকে
দারুণ তৃষ্ণায় অগ্নিখরা
গোপন গহন বুকপোড়া অপেক্ষায়
বুকের সমুদ্রে ফোটে কত যে শতাব্দী সেই মুখ।
যতবার দেখি তাকে যেন মনে হয়
বনলতা সেন আর লাবণ্যের হৃদয় কিরণ
প্রেমের গোপন গুহা—অপরূপা শব্দ-বর্ণ-চিত্র
এই ছবি কোনোকালে ভালোবেসে কেউ
থেকেছে কি নিদ্রাহীন!
প্রশ্ন
তোমার দুচোখ ক্লান্ত ভারী, চুলও এলোমেলো
হাওয়ায় হাওয়ায় উড়ে উড়ে মেঘের দেশে গেলো
ঘুমাওনি কি কাল সারারাত চোখের কোণে কালি
অনাদরে কাটছে সময়? দেয়ালজোড়া বালি?
যখন ঘুম ভাঙবে
যখন জাগবে তুমি ঘুম থেকে দেখবে তখন
কবিতার শব্দগুলো তোমাকে জানাবে অভিবাদন
রাতভর কবিতার শব্দগুলো জেগে জেগে আছে
যখন ঘুম ভাঙবে তোমার, তখন
আমার কবিতা
জড়িয়ে যাবে তখন তোমার শরীরে
কাঁচামাটির আবেগে
ভোরের স্নানের কাঁচা-কাঁচা রোদ হয়ে।
যখন তোমার ঘুম ভাঙবে তখন
কবিতার শব্দগুলো
অপেক্ষায়
মুগ্ধতায়
প্রথম নিশিতে নিদ্রাহীন,
তোমার মায়াবী মুখে ধ্যানী হয়ে আছে।