ইজেল অথবা ইউরেনিয়াম
এখন মনে হয়, কতদিন বর্ষা দেখিনি আমি। কতদিন
কালো অঙ্গার হাতের তালুতে নিয়ে অনুভব করিনি
তার উষ্ণতা।পুড়ে যাওয়ার ভয় ছিল না জেনেও
কতদিন বসন্তকে ডাকতে পারিনি কাছে। কিংবা কৃষ্ণচূড়া
ফুলের রঙে সাজাতে পারিনি বসন।
তদিন সিক্ত হইনি ইজেলের আগুনে। কিংবা কেউ
ইউরেনিয়াম দিয়ে এঁকে রাখেনি আমার মুখছবি। বলেনি-
কালো অক্ষরগুলো যে যুগে যুগে পুড়েছে, তা কি তুমি
জানো কবি!
এখন মনে হয়, কোনো আয়ুই সংরক্ষিত থাকে না।
কোনো নক্ষত্রই আর ফিরে না রাত্রি-প্রণামে;
. অথচ দিন যায়, অমাবস্যায়
. এই চরাচরে
. পাখিদের গৃহে গৃহে শোকসন্ধ্যা নামে।
ঘূর্ণি নয়, ছায়ার বেদনা
কোনো শপথই শুদ্ধ নয়।
মানুষের কিংবা বৃক্ষের
পতঙ্গের কিংবা পাতার
অনলের কিংবা অসীমের
কোনো ওয়াদাই রক্ষিত হয় না সূর্যের বিপরীতে।
যে চাঁদ মানুষকে ভালোবাসা দিতে জানে না;
তার কথার কোনও মূল্য নেই।
যে সূর্য দুপুরের গ্রহণে কালো রঙ ধারণ করে,
সে তো শক্তিহীন!
কোনো ঘূর্ণিই পরিপূর্ণ নয়।
চক্রবাঁকে হারিয়ে যাওয়া ঢেউগুলো
যে ছায়া রেখে যায়,
মানুষ একদিন খুব হাসতে হাসতেই
সেই ছায়ার বেদনায় হারায়।
আরেকটি সম্মতিপত্র
কিছু খড়কুটো জ্বালিয়ে ফেলার সাহস করো
এবং কিছু শব্দ পোড়াতে পোড়াতে সাজাও পলির স্তর।
সব মাটি কাজে আসে না জেনেও,
. চিনে রাখো কিছু পোড়ামাটি।
প্রাণগুলো পুড়তে ভালোবাসে। এবং প্রাণীগুলো;
আর সেই প্রাণী যদি মানুষ হয়
তাহলে তো কথাই নেই;
. পুড়বে এবং পোড়াবে সমুদ্রের অনন্ত জল।
আমার অবর্তমানে আমার কবিতাগুলো জ্বালিয়ে
ফেলার যে সম্মতিপত্র লিখে যাচ্ছি
তুমিও তা’তে সাক্ষর করে রাখো,
. প্রকৃতি হে
. রাজী হও,
. সাহস করো,
কারণ অবশেষে সবকিছু জ্বালিয়ে ফেলার সাহস
সবাই দেখাতে পারে না।