আল্লাহর কসম! হে মক্কা, নিশ্চই তুমি সবচেয়ে প্রিয় ও পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম স্থান। আমাকে যদি এখান থেকে বের করে না দেওয়া হতো আমি কিছুতেই তোমাকে ছেড়ে যেতাম না। [হজরত মোহাম্মদ (স.)জামে তিরমিজি: ৫/৭২২]
স্রষ্টার কসম আমিও রিফিউজি, আমিও রোহিঙ্গা। পূর্বপুরুষ রিফিউজি বলে করছি না হাজির, গৌরব কিংবা লজ্জার মম পরিচয়। বদ্বীপ বাংলার শ্যামল মৃত্তিকায় রচিত আমার আঁতুড়ঘর। তবু আমি রিফিউজি, আমি রোহিঙ্গা নিশ্চই। মানুষ মাত্রই রিফিউজি স্বেচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায়, দেশের ভূগোল পেরোনো তত্ত্বকথা, সে তো রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কল্পগাথা। এই যে আমি খাট থেকে নামলাম, চেয়ার ছেড়ে উঠলাম, ঘর থেকে ফেললাম যুগল-পা, গ্রাম থেকে গেলাম গ্রামান্তরে, শহর থেকে শহরান্তরে, দেশ থেকে দেশান্তরে, আর খুলে ফেললাম রিফিউজির হালখাতা। আদম ও হাওয়া, অ্যাডাম কিংবা ঈভ, ব্রহ্মা কিংবা দুর্গা-মনু কিংবা শতরূপা যে নামেই ডাকো না কেন, জেনো এঁরা সব্বাই রিফিউজি, রোহিঙ্গাদের উত্তরাধিকার তাদের পরিচয়। স্বর্গ থেকে আদম-হাওয়া মর্ত্যে নিয়েছে শরণ। কহর দরিয়ায় যেভাবে ভাসে রোহংবাসী কুলছুম, ভূমধ্যসাগরে যেভাবে ভেসেছিল আয়লানের পরিবার, ঠিক সেভাবেই ভেসেছিল একদা নূহের কিস্তি, ঈসা মুসা মোহাম্মদও ভেসেছিল পলকা হাওয়ায়। মহামতি বুদ্ধ রাহুলকে ছেড়ে, বোধিবৃক্ষে কি নেয়নি শরণ, হয়নি রিফিউজি? পৃথিবী রিফিউজি চিরন্তন এ সত্যও কি করতে হবে অনুসন্ধান, গো-এষণা? গোলাপ রিফিউজি, আপেল রিফিউজি, রিফিউজি পদ্মার জল, হাওয়া দখিনা। আমি রিফিউজি, আমি রোহিঙ্গা, নাফের জলে ভাসা মানুষে আমি খুঁজি নজরুল, জীবনানন্দ মার্কস, আইনস্টাইন, চ্যাপলিন কিংবা আগামীর শেখ হাসিনা…