মরফিন
অনেক ঘুম পায় আমাদের
আমার ছোট ভাইবোন
হাঁটতে হাঁটতে ঘুমায়
ঘুমাতে ঘুমাতে দৌড়ায়
আমি
ঘুমের চাকার তল থেকে পালিয়ে যাই
যখন নার্স মাকে পুশ করে মরফিন
আমরা গলাগলি করে ঘুমিয়ে থাকি
ব্যথার তীব্রতায়
এখন
ব্যথারা মলিন হয়ে পড়ে আছে
নিথর দেহের পাশে
মায়ের অনন্ত ঘুমের মধ্যে
কোনো ছটফট নাই
যেন একটুকরো পাথর
অ্যাকুরিয়ামে জলহীন পড়ে আছে
শ্যাওলা মেখে
আমাদের ঘুম পায়
ক্লান্ত চোখের যোগাযোগে
আমরা ঘুমিয়ে আছি
অক্সিমিটারের অপারগতায়
রাতের বিষণ্নতা আর নিয়তির নির্মম কৌতুকে
চরে, চরাচরে
প্রতিদিন কত কত স্বপ্ন মরে যায়
প্রতিক্ষণ কত কত ইচ্ছেকে কবরে রেখে আসি
পথেঘাটে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যাই
যতদূর যাই
নিজের থেকে পালাতে পারি না একবিন্দুও
জুন আসে সেপ্টেম্বরে
আর লুকাই বংশালের সাইকেল পল্লিতে
কানাগলিগতে, জ্যামে ঘামে লেপটাই
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের উৎকণ্ঠা
গোপন করে সিগারেটের ধোঁয়ায় মিশে যাই
ধূলো ধারালো ছাই।
মিশে যাই কার্বনে, নিকোটিনে, টিএইচসিতে
তোমাতে মিলিত হতে পারি না
দূর অতীতের কোমল উদাসিনতার বিষে
রক্তকণিকায় জমেছে ঘুণ
আমার মায়ের নাম কোহিনূর
আমার মায়ের নাম কোহিনূর
একটি পাথর
যিনি জন্ম দিয়েছেন আরেকটি পাথর
কারা বন্দি করলো আমাদের?
রাণীর মুকুট আর মিউজিয়ামে!
আমার মা কোহিনূর
নূর তাঁর ঝলসে গেছে কবেই
আমি খুর হয়ে কাটছি, টুকরো টুকরো
না না, সম্ভবত হাতুড়ি আমি
অথবা করাত
বাটালি গাছের তবু কাটছি শিকড়
আমার মা
যার সমস্ত যন্ত্রণা যদি ভ্যানিস করে দিতে পারতাম
এই অন্তিম অনন্ত বেদনা বেলায়
হায়! একটা পাথর টুকরো
আরেকটা পাথরের ক্ষয়ে যাওয়া থেকে
রক্ষা করতে জানে না। অনিবার্য এ ধ্বংসলীলায়