আমাকে স্পর্শ করো ভালোবাসা
দুরন্ত বালক যেমন জলের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে
তেমন করে ঝাঁপ দাও অস্তিত্বের রহস্যে।
শরীর শিউরে ওঠার মতো স্পর্শ করে
পাহাড়ের গায়ে ঝাপটে থাকো।
জলের মতো গভীর স্পর্শ করো
যেমন করে মাছেরা সাঁতরে বাঁচে।
যেমন করে কৃষক মাটিকে স্পর্শ করে পরম মমতায়
যেমন করে কৃষক নতুন ফসল তোলে স্নিগ্ধ ভালোবাসায় ,
তেমনি করে কাদামাটিতে লেপ্টে থাকো
বহুশতকের বহুব্রীহি লুট করে
উদোম দিগম্বরে ফুলেল স্পর্শ দিয়ে।
তোমার ফসল বোনার ক্ষেতে
শস্যের ঘ্রাণে বয়ে যায় শান্তির সুবাতাস,
সমস্ত কামুক অভিমান পুড়ে
ছাই হয়ে আবার সোনালি হয়ে ওঠে।
এসো
আমাকে আলিঙ্গন করো
চালকুমড়োর গায়ের মতো বুকে
ঘুমিয়ে থাকতে স্বাগত জানাও।
শুভ্র হাঁসের মতো কাগুজে পালকে
জড়িয়ে রাখো সাত জন্মান্তরে।
এসো!
ভালোবাসার নিমন্ত্রণ দাও।
গোপন নথি
হননে উন্মাদ-পিপাসা মানুষের রক্তের শিরায়
ভেদাভেদের ক্লান্তির জটিল প্রবাহ
আমাকে আরো নত করে মানুষের কাছে।
তখন বুকের ভেতরে একাত্তরের রেকর্ডে
বুটের শব্দ শুনে আমি আঁতকে উঠি।
বৈষম্যের মুখে আছড়ে পড়া অগ্নিমান্দ্য
বিসর্জনের ইতিহাস ম্লান মনে হয়।
গোপনে দেখি
সাদা কাগজে কাটাকাটি হিসেবের দাগ।
প্রতিটি দাগে লেখা আছে শ্রমিকের,
শোষণের মরণের খান
রক্তের গভীরে মেতে আছে সাম্প্রদায়িক
চেতনার কোলাহল
নীরবে বসে আছে আত্মঘাতী ধর্মবিষ ,
পাপের মতো গিলে খায় সভ্যতা, সমাজ।
বহুদিন চিনি
আশ্বিন এসেছে হৃদয় জুড়ে
যেন প্রণয় ডেকেছে আজ।
হেমন্ত আসেনি, শরৎ আকাশে
নীলাম্বর করেছে রাজ।
কত জোছনায় চাঁদের
আলোয়
ছাপিয়ে যৌবন লাজে।
মধুর পিরিতের অঞ্জলিতে
অর্ঘ্য দিয়েছে মজে।
যেন সে নতুন প্রেমের দ্বারে
সেজেছে নতুন সাজে।
বলেছ দেবী:
‘রয়েছি বসে
মঙ্গল হাতে
বিনাশের পাশে।’
কাতর প্রেমে দিয়েছ জবা
গ্রহণ করেছি মঙ্গল ঘটে।
নিত্য জীবন ভরিয়া
হৃদয় জুড়িয়া নিঃশ্বাস টানি
প্রাণন্ত চঞ্চলায় যত দূর হেরি
তোমারি পল্লব চুম্বন
তোমার নয়ন তরী ।
নিয়মের বাঁধন ডোরে
অনেক দোষীর দোষে,
ভাসাইয়াছি ডুবো জলে
মনে হয় বহুদিন চিনি তোমারে।