অহম্
আমার পা খোয়া গেছে স্বার্থের পেছনে ছুটতে ছুটতে
হায় পা!
আমার হাত মুছে গেছে নিরন্তর ভিক্ষাবৃত্তিতে
হায় হাত!
আমার চোখ পুড়ে গেছে লালসার আগুনে
হায় চোখ!
খোঁড়া আমি, নুলো আমি, অন্ধ আমি
তবু আমার ‘আমি-আমি’ গেল না
শিশিরে পা রাখো অসুখীরা
গেরুয়া বসনে ঘোরে মেঘ
ঝিঁঝিরা সেতার নিয়ে বসে
খেয়াঘাটে বিষাদের ছায়া
কত দ্রুত সন্ধ্যা নামে রোজ
এত কেন দ্রুত হাঁটে পথ?
এত কেন তাড়া দেয় নদী?
এত কেন ছোট এ জীবন?
বর্ণমালা শেখাই হলো না
আজও আমি ‘অ’য়ে পড়ে আছি
‘অ’য়ে দেখি কত কী অহম্
‘অ’য়ে তো অধমও হয়, নাকি?
সে-অধম প্রাণী তো মানুষই?
নিজেকে সে ‘শ্রেষ্ঠ’ জানে নিজে
শ্রেষ্ঠের কুকীর্তিগাথা শুনে
রোজ ভোরে ব্যথিত শিশির
ঘাসের আঁচলে চোখ মোছে
সর্বপ্রাণময় পৃথিবীতে
আমি এক ব্যথিত শিশির
একফোঁটা ব্যথিত শিশির
শিশিরে পা রাখো অসুখীরা
বার্তাকক্ষ থেকে
এ মিস্ত্রি নতুন; সূত্র—স্বপ্নে পাওয়া চাবি
এ স্বপ্ন ব্রেকিং—ঘন ইন্ট্রো হওয়া চাই
এ ইন্ট্রো সরেস—ভালো শিরোনাম দাও
এডিটিং ডেস্কে আজ আর. রাজী আছ?
এ মিস্ত্রি মানুষ ধরে মেরামত করে
পুরুষ মানুষ পেলে শিশ্ন পিষে দেয়
তাদেরই নষ্টের গোড়া জানে
যে-কোনও ধর্ষণ মিস্ত্রি দক্ষ হাতে সারে
ক্ষমতা ধর্ষক হলে তপ্ত শিকে গাঁথে
জনমনে ব্যথা দিলে শাসকের বুকে
লোহার পেরেক ঠুকে হাসে
এডিটিং ডেস্কে আজ আর. রাজী আছ?
রাক্ষসনগরী
রাক্ষসের শিং—ঘাড়ে মাথা নেই—কাউকে চিনি না
এ আমারই মুদ্রাদোষ—কিছু দৃশ্য বেশি দেখে ফেলি
তার মানে এই নয়, তোমাকে চিনিনি
বাসের জানালা দিয়ে দেখা সেই নদীটাই তুমি
রাক্ষসনগরে কেন লেকের পোশাকে ঢেকে আছ?
এঁদো বাস্তবতা নিয়ে গল্প করে পাশের টেবিল
হাউমাউ ছড়া কাটে কলেজপড়ুয়া কিছু তরুণ রাক্ষস
আইফোন হাই তোলে—আমি দেখি পাখির কঙ্কাল
লোকটা পাগল
হতাশ কেন চাবির গোছা?
শেষ চাবিতেও দরজা খোলে
জোট বেঁধেছে প্রণামগুলো
একজোড়া পা খুঁজছে ওরা
জানলা আছে মুখখানা নেই
তার মানে মন নির্বাসিত
কার যেন চুল ঢোলকলমি?
সেই ঝোপটার পাশেই নদী
কোন্ নদীতে বান ডেকেছে?
তার ঠিকানা হিজল জানে
কেউ ডাকেনি, এমনি এলাম
শুনতে এলাম—’লোকটা পাগল’
নবীনতমকে
কেড়ে কেন নিতে চাও, কেন বল, ‘মাদুর সরাও’?
তুমি এসে গেছ বলে এ মাদুর উঠোনে পেতেছি
এই নাও কবিতার খাতা
কেটেছি সামান্য দাগ—মুছে দিও—রাবারও দিলাম
খুঁটিনাটি আরও যা যা সরঞ্জাম ছিল, সবই দিয়ে যাচ্ছি
অপছন্দ হলে ফেলে দিয়ো
কেড়ে কেন নিতে চাও, অগ্রন্থিত পৃথিবী তোমার