(বরিশাল বনাম নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষার প্রেমের কবিতা)
মেয়ে
হারা দিন-রাইত জ্বালান কিল্লাই, হারি না আর সইতাম
কইলজা হুরি ধুঁয়া উডে, কার কাছে যাই কইতাম;
এত্ত জ্বালা কেন্নে জ্বালান, দয়া-মায়া নাই
হেমের নামে কিয়া এগিন, ভাল্লাগে না ছাঁই!
আন্নের লগে বইনত ন য়াঁর ইয়ান কতা খাঁটি
জ্বালাই হোড়াই সোনার জীবন কিল্লাই কইত্তাম মাডি;
আগে যদি জাইনতাম আন্নের বরিশালে বাড়ি
ফেইসবুকে আন্নের লগে দিতাম জন্মের আড়ি।
ছেলে
মুই তোমারে ভালো পাইছি, বুঝি না দেশ গ্রাম
জোর হইররা আদায় হরমু ভালোবাসার দাম
মোরে ছাইররা যাইত্ দিমু না অন্য পোলার কাছে
মোড্ডে ভালো প্রেমিক পুরুষ দেশে কি আর আছে?
মেয়ে
হুদাহুদি হুশুর হুশুর করি কি লাভ অইবো—
মাইনষেরা য়াঁর মুকে মুকে বদনাম শুধু কইবো!
হেয়াত্তুন ভালা বলক দিলাম, আন্নে ছলি যান
আর এক্কানা জ্বালাইয়েন না, শান্তি যদি চান!
হাঁছা কইছি আন্নের লগে কইতামন আর কতা
কইলজার মইধ্যে উডে উডুক হিন হিন করি ব্যথা!
ম্যাসিঞ্জারে হোন দিয়েন না, বুইজ্জি আন্নে কিয়া
বরিশাইল্যার লগে বাপে দিতো ন য়াঁর বিয়া।
ছেলে
হেইয়া মোরে কও যে মনু, মোরে চেনো তইু
নামি দামী বংশের পোলা বরিশাইল্যা মুই!
হাঁক দেলে মুই বাঘও কাঁপে, সিংহ থাকে চুপ
দেশ গেরামের মাইয়া পোলায় দেখছে আমার রূপ!
মোরে তুই ইনসাল্ট হরছো, হুনলে মোর বাপ—
মেয়ে
কিয়া কইরবো, মনের দুঃখে কুয়াত দিবো ঝাঁপ?
ছেলে
কুয়া কও ক্যান, মোগো জেলার নদী-সাগর মরছে?
মোর দাদায় সাগরে যাই বিশাল হাঙ্গর ধরছে।
মেয়ে
ওম্মা! আন্নে কিয়া কন, আন্নের দাদা জাইল্লা?
ছেলে
কইলাম কি, হোনলেডা কি—জটিল নোয়াখাইল্যা!
মোরে তুমি চেনলে না তো, মুই যে কী বোজবা
মোগো ঝাড়ের বাঁশ খাইয়া মোরেই শুধু খোঁজবা!
মেয়ে
থামেন, থামেন, আর কইয়েন না, যাইতান্ন আন্নের কাছে!
মনের মধ্যে আন্নের উরফে গোস্যা জমি আছে;
হামকি ধমকি হুনিই বুইজ্জি আন্নে এক্কান বেডা
ঝগড়া বিবাদ বন্ধ করেন, মাফ করি দেন জেডা।
আন্নের মনো জিলাপির হ্যাঁছ, আঁইশ্যা রাইতের কালা
আঙ্গো বাড়ি নোয়াখালী, ব্যাকগুন মানুষ ভালা!
লম্বা গলায় মিছা কতা হারাজীবন কইছেন
ছলচাতুরি ভাওতাবাজির মধ্যে ডুবি রইছেন
এবার এগিন ছাড়ি মিঞা নিজের হঁতে যান
ভালা মানুষ হই জীবনে শান্তির লগে থান;
ছেলে
মুই কই কি, বাহানা ছাড়ো, লও দু’জনে ভাগি—
মেয়ে
তওবা, তওবা, আঁই হাইত্তান্ন, আঁর বাপে খুব রাগি!