কবি ভুল, কবি মিথ্যা
কুমারী সন্ধ্যার বাঁকে স্বপ্ন আঁকে দূরের তারারা
কিশোরী নদীর স্রোত ঢেউ ঢেউ চুলের বেণীতে
কেঁপে ওঠে; দুলে ওঠে বাতাসের আঘাতে আঘাতে
রাত্রির বয়স বাড়ে ডুবে যাওয়া চান্দের আন্ধারে
কবিরা কেবল স্বপ্ন দেখে যত অলীক রাতের
সত্যরে মানে না তারা, ভালোবাসে মোহন মিথ্যারে
লোকে তাই ঘৃণা করে কবিদের নাম
কবি মিথ্যা, কবি ভুল কবি মিথ্যা-ভুল
আজীবন ভুলপথে ডেকে যায় শুধু মানুষেরে।
আত্মপ্রতিকৃতি
আঁকতে বসে আত্মপ্রতিকৃতি
এঁকেছিলাম ক্ষিপ্র চিতার মুখ
মনের ছবি ফুটিয়ে তোলা যায়?
তার সাধনায় রাত্রি হলো পার।
মগজ-ভর্তি হাঙর-কুমির নাচে
ক্ষুধার্ত খুব, তাড়ায় অহর্নিশি
হাতের তুলি সিংহের থাবায় গেলো
চোখ এঁকেছি, দেখি অন্ধকার।
আঁকতে বসে নিজের প্রতিকৃতি
এঁকে ফেলি বন-কুকুরের মুখ
বুকের ভেতর ঝড়ের আওয়াজ ওঠে
হাসি শুনি হিংস্র হায়েনার।
সময় আঁকার নামে কেবল আঁকি
অদ্ভুতুড়ে যত প্রাণী আছে
কেবল মানুষ আঁকতে গেলে দেখি
বিরান ভূমি আগুনে ছারখার!
গল্পের মহারথী
যতটা মেপেছ পথ, ততটা হাঁটোনি
শাবল-কোদাল হাতে পাহাড় কাটোনি
ধরোনি তীর-ধনুক, ছোড়োনি বল্লম
কর্মে-ধর্মে দিন-রাত কখনো খাটোনি
তবু তুমি কর্মযোগী, জ্ঞানী মহামতি
গল্পের বর্শায় মারো রথী-মহারথী!
আকুলি-বিকুলি
মাটিতে গোলাপ জাগে গগনে গগন
আরশিনগরে জাগে ফকির লালন
গানে গানে মন খোঁজে হৃদয়ে হৃদয়
আসমানে তারা গলে হয়েছে সদয়।
দুখের সন্ধানে ঘুরি নদী থেকে নদী
একটি অসুখ দেখো হাসে নিরবধি
করি গান, শুনি গান, ডুবি বেদনায়
আকুলি-বিকুলি করে মন উছলায়।