অমরতা
মরতে আমার খালি দেরি হয়ে যায়!
আকাশের কিমাকার মেঘদল দেখে
আমি একা মরে মরে বেঁচে থাকি রোজ
আর বেঁচে যেতে গিয়ে পুনরায় ভাবি,
পরদিন পেতে পারি মরণের খোঁজ।
পৃথিবীতে আমি মরে যেতে পারতাম
কোন সাপের কামড়ে, হঠাৎ বিমারে,
পথে হেঁটে যেতে যেতে বাসের তলায়!
আমার কাফন তবু চুরি হয়ে যায়
আমার গায়ের জামা ছোট হয়ে যায়।
পৃথিবীতে আমি মরে যেতে পারতাম
হাসতে হাসতে একা মাথা ঘুরে পড়ে,
ধারালো ছুরিতে আর কফির চুমুকে!
কফির বদলে লোকে বিষ খেতে দেয়
আমি এক চুমুকে তা খেয়ে উঠে ভাবি,
এবার আমারে আর যাবে না বাঁচানো
আকাশের মেঘদল উড়ে গেলে দেখি
বিষের গেলাসে আবে হায়াত মেশানো!
কাগজের প্রেম
চোখ থেকে জল পড়ে জল থেকে যদি
ভেসে ভেসে চলে যাই মাছরাঙা নদী
সেখানে কি পাবো আমি কোন খড়কুটো
পেলে ঠিক ধরে নেবো হাতে একমুঠো
তাকে ধরে চলে যাবো রোদে পোড়া দ্বীপ
হাতে ধরা কুটো আর হাতে ধরা ছিপ
হোক না প্রবাল তলে তরুণীর বাসা
ছিপ গেঁথে তুলে নেব তার ভালোবাসা
তার আসা তার বসা তার চলাচল
চলে গেলে ভেসে যাব ভেসে ভেসে জল
জেনে নেব কে আপন কে আসলে পর
ডুবে যদি যাব তবু হাতে থাক খড়
কে কোথায় ডুবে যায় কোথায় যে তীর
মাছরাঙা নদীতে সে তরুণী কুমির।
উৎসর্গ
কড়াইয়ে তপ্ত আমার মগজ|
দেয়া হবে আজ কার পেয়ালায়,
চোখ রাখো মন কারা আসে যায়
উনুনে পোড়াও ধূসর কাগজ।
গাড়ুগুলো ভরো রক্ত ঢেলেই
উদাম সাজাও গেলাস রুপার
গুনে দেখো মোট কতগুলো হাড়
পোড়ানো হয়েছে আমার হেঁসেলে।
জীবগুলো সব হয়েছে অধীর।
হৈ চৈ নয়। একদম চুপ।
টেবিলে এবার জ্বেলে দাও ধূপ,
শেয়ালেই খাক আমার শরীর।
মনে রেখো, চোখ নেয় যেন খোঁজ
পৃথিবীর পথে কবির এ ভোজ।
ফুটনোট
অনেক পিপাসা আছে বোধের অতীত
বরফের গায়ে তবু লেখা থাকে শীত
শীতকাল এলে দেখি ঝরে পড়ে পাতা
এঘরে বালিশ পোড়ে ঐঘরে কাঁথা
যার কিছু পোড়ে নারে তারও পোড়ে মন
বাসে বসে ভুলে গেছি কে যে কার বোন
কে কাহার বোন হয় কে যে কার ভাই
এই শীতে দল বেঁধে এসো ভুলে যাই
ভুলে যেতে যেতে গিয়ে ভুল করে দেখি
পিপাসা মেটাতে আসে ভিনদেশী পাখি
পাখি এসে ফল খায় পোকা খায় ফুল
কে আর শোধাতে পারে কবেকার ভুল
ভুল তার কবেকার অন্ধকার নেশা
মরণের গান গাওয়া শিশুটির পেশা
শিশু একা গান গায় বাবা গেছে চাঁদে
শান্তি ইয়াহওয়েহ কত শান্তি কাঁদে
যে কাঁদে কাঁদুক তবু লিখি ফুটনোট
ফুল তুই তেলাবিবে বোমা হয়ে ফোট!
কয়েকটি কোয়াটরেন
পুতুল
রাত আমারে দিনের দিকে টানে
দিন আবারো রাতের কাছে আনে
এ চুল টানে তো ও এসে আঁচড়ায়
আমার জীবন কাটে টানা হেঁচড়ায়!
পিঁপড়া
একটা কাপ দশটা মুখ
লাল পিঁপড়া কাঁপছে বুক
চিনির দানা ভেঙ্গে আনা
দশটা মুখে একটা সুখ!
নদী
নদীটা গভীর কিনা
দেখতে ইচ্ছে হয়
আমি সাহস পাই না
আমার ডুবে যাবার ভয়!
আমি
আমি যে পথেই হাঁটি
পায়ের তলায়
মাটি থাকে
আর মাথা আকাশের দিকে।
অবুঝ
খুন বন্দুক বোঝে না
বন্দুক খুন বোঝে না
মানুষ দুটোই বোঝে
ফলে বন্দুক খোঁজে!
তোমার দিকে যাই
চোখের সামনে পুড়ছে আমার ডানা
তীরন্দাজের তীরগুলো তাক করা
তবুও তোমাকে বলছি দূরের পাখি
আমার এখনো উড়তে অনেক বাকি