চোরের মায়ের বড় গলা
‘চোরের মায়ের বড় গলা’—এই প্রবাদের সত্যতা যাচাই করতে এক বিজ্ঞানীকে দিলাম ‘কুত্তার বাচ্চা’ বলে গালি। শুভ্রকেশি বিজ্ঞানী চমকিত চোখে তাকালেন আমার দিকে। অতপর রাবীন্দ্রিক কণ্ঠে বললেন—কুকুরের বাচ্চা। কী মিষ্টি, না! আমার খুব পছন্দের। কোথায়?
উত্তর না পেয়ে এক প্রযুক্তিবিদকে দিলাম—কল। ওপাশ থেকে ফোন ধরার সঙ্গে সঙ্গেই দিলাম গালি। কিন্তু তিনি ভাবলেশহীন। আমার কথা শেষ হলে নরম সুরে বললেন—মোবাইলফোনটা কোন কোম্পানির? সাউন্ড তো বেশ ক্লিয়ার।
প্রবাদের সত্যতার কূল না পেয়ে রেগে উঠলাম আমি। হটহট করে ঢুকে পড়লাম সামনের এক ধর্মশালায়। আর তাদের বিশ্বাসকে কটাক্ষ করে পাড়লাম গোটাদুয়েক গালি। অমনি উলু দিয়ে উঠলো হাজারো ধর্মপ্রাণ। সাঁই করে দৌড়ে এসে আমাকে ধরে ফেললো কয়েকজন আলখাল্লাধারী। এরপর শুধু ধুমধাম শব্দ। বেহুঁশ হওয়ার আগে শুধু চেঁচিয়ে বলতে পেরেছিলাম, ছাড়ো মোরে। আমি ভাস্কর্য নই, রক্তে-মাংসের এক মানুষ তো!
এরপর আর আমার ‘চোরের মায়ের বড় গলা’—এই প্রবাদের সত্যতা যাচাইয়ের সাহস হয়নি।
অবিশ্বাস
তুমি যখন তোমার শিশুসন্তানকে নিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকো
তখন তোমার ঘুমন্ত সন্তান সজোরে—তোমার হাত চেপে ধরে
হাজার দিন এমন ঘটলেও—একবারও কি ভেবে দেখেছ, কারণটা কী?
হ্যাঁ, হ্যাঁ, অবিশ্বাস!
তুমি বাবা কিংবা মা—যেই হও, তোমাকে শতভাগ বিশ্বাস করতে পারে না—তোমার কোলের সন্তান
তারপরেও তুমি সন্তানের সঙ্গে বিশ্বাস ভঙ্গ করে চলো—প্রতিনিয়ত
এই কারণে সন্তানেরা বড় হয়ে খুঁজে ফেরে—একজন বিশ্বস্ত সঙ্গী
ব্যর্থ হলে ফের খোঁজে, এভাবে চলতে থাকে খোঁজাখুঁজির পালা
মূলত এই পৃথিবী একটা বিশ্বাস-অবিশ্বাসের গোলকধাঁধা
এই রহস্য জেনে তোমার মনটা উসখুস করে উঠলো, তাহলে—
তুমি যার সঙ্গে থাকো—সেই সঙ্গীটি তোমার কতটা বিশ্বস্ত?
আজ রাতেই তার বিশ্বাসের একটা পরীক্ষা নিলে কেমন হয়—
কিন্তু সাবধান, জেনে রাখো—
বিশ্বাস-অবিশ্বাসের এই খেলা, আগুন নিয়ে খেলার চেয়ে—শত গুণ ভয়ঙ্কর!
পেটনীয় সূত্র
তুমি যখন সুখ-টেবিলে বসে মাংস দিয়ে ভাত খাচ্ছিলে
এমন সময় তিন তলার বাড়িওয়ালা চাচা—
খুক করে কাশি দিয়ে থুক করে নিচে ফেললো একদলা কফ
. আর তুমি হড়হড় করে বমি করে দিলে
এদিকে পড়ার শব্দ শুনে সাঁই করে দৌড়ে এলো পথশিশুটি
কিন্তু সানশেডে দাঁড়ানো দাঁড়কাকটি মুহূর্তেই ছোঁ-মেরে গিলে খেল কফ-দলা
বমি শেষে স্বাভাবিক হয়ে তুমি যখন—বারান্দায় এসে দাঁড়ালে
তখনো দেখলে দুহাতে মাথা ভর করে ওপরের দিকে তাকিয়ে আছে শিশুটি
সঙ্গে সঙ্গে তুমি ফ্রিজ খুলে একটি আপেল—দোতালা থেকে ছুড়ে ফেললে নিচে
অমনি শিশুটি কুড়িয়ে নিয়ে গোগ্রাসে খেয়ে ফেললো
বিজ্ঞানের ক্লাসে এই গল্প শিক্ষকের মুখে শুনে দ্বিধাগ্রস্ত শিক্ষার্থীর জিজ্ঞাসা—
আপেলটা তো খেয়ে ফেললো, তাহলে নিউটনীয় সূত্রের কী হবে?
উত্তরে ভাবগম্ভীর কণ্ঠে শিক্ষক বললেন, বৎস—এটা হচ্ছে পেটনীয় সূত্র
এই সূত্র যেদিন পূর্ণতা পাবে—সেদিন এই বাংলার ঘরে ঘরে জন্ম নেবে
অমন হাজারো নিউটন-আইনস্টাইন!