এক.
পিপাসা অগণন―ফোরাত কোন ঠিকানায়
চলে গেছে সুদূর জলে, কৃষাণীর ঘামে,
অজস্র সবুজের নাকে-মুখে তার সেয়ানা অন্ধকার―
সে অগ্রহায়নে বন্দি ঘুঘুর মতোন ছটফট
বহুল ঘৃণিত ছবি―নেচে যাও চৌচির।
আমার সিথানে তোমাদের নামদিন ভেলা
অযথাই হেঁটে যাচ্ছে ভূতে! আহা পাঠ্য চোখ
দেখো নিজস্বীর কারুকাজে মজে যাচ্ছি দ্রুত…
অঅবার অসহ্য জামিন নিয়ে একা হয়ে আছি
অপ্রস্তুত চাঁদের লজ্জায় কাতর ভাই-বোনে;
তবু কিন্নর ক্ষুধা অদ্ভুত―এসেছে পেছনে
যেন টুপ করে ভেঙে দেবে শব্দের পাহারা সকল।
সাথে করে নিয়ে যাবে যৌথ বাগান
অসংখ্য উৎপাত সমেত সুগঠিত প্লাবন।
শুধু এই বরফ বর্জিত হাত-পায়ে
লিখিত হয়ে থাকবে পৌরুষ;
মড়মড়ে কার্তুজ আর শ্রদ্ধানত শীত
জানতো কি কেউ এমন শীত আসবে কোনো দিন
ফুটফুটে অন্ধকারে জ্বলজ্বল করবে অবরুদ্ধ সমাবেশ!
দুই.
ফুরিয়েছে সব―আলতার মুখোশ, রঙহারা
সুস্থ অসুখ। চারপাশে নকশার বাজার
তালার কবিরাজ, ফুটেছে বিস্তর―
দূর কান্নায় লেপ্টে আছে নগরীর কৌতূহল ভরা ধুলো।
কালোর কোর্তায় বিয়োগের মহড়া ছিল,
পাড়া ভরতি ফসলের ফুটপাত;
জেগে থাকো নরকের সিন্ধুকে, চুপচাপ শুয়ে যাও―
আলগোছে সরে যাওয়া কবরের মতোন।
যেন মাটির শরীরে ঢুকে গেছে আরো সতেজ, সহজ মাটি;
যে মাটির মুখ জুড়ে রজস্যের ফর্মা, বানানের কৌতুক,
চলমান ঘোরা―ছিঁড়েছে বৈশাখ!
মুখের বারান্দায় কারা আজ সরব
ঘরহীন নায়রে নুয়ে আছে ঘোর;
তাদের ফলদ নামে মুছে গেছে বিকেল,
সন্ধ্যা ও কাগুজে সাহস! সমস্ত অভ্যাস
গন্তব্যহীন মুখের খোঁজে পৌঁছেছে একা―
. আরও গভীর রহস্যে।
রক্তের রঙে অজুত পাহাড় পোড়ানো গান নিয়ে
নিজের কাছে, নিজস্ব অভিধানে―
নাম ও ফুরানোপ্রায় হাটের কোলাহলে!
তিন.
আমাদের কর্তব্য ছিল গোপন হওয়া;
আরও গাঢ় মৃত্যুর সিথান অব্দি চুপচাপ রটে যাওয়া।
যেখানে মৌয়ালের উপটান রচিত হয়েছে―
দ্রুতগামি চিঠির আদলে।
সময়ের পরিপত্র কাঁধে নিয়ে ছুটেছে সকাল;
দুপুরের সোনালি রোদে লিখিত হয়েছে পৌষের তাজা করুণ সুর।
যেন অভ্যাস ফেরত দিনের কাছে ছোঁয়াছে গেয়েছে দৌড়―
এই দিন জমাহীন জীবনের একক নাচ
শেষ হওয়ার আগে আরও কত যুগ
. আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে।
পরিজায়ী চিন্তার নাগাল পেতে
হাতের কোরাসে উজ্জ্বল হয়েছিলো শাদা।
ভৃত্যের সাজগোজ নিয়ে মহাকব্য হয়েছিলো একদিন,
যেন এসব আজ অপরিচিত গোত্রের কাছে খুলেছিল
. বাহারি মৃত্যুর সৌরভ!
প্রকৃত অর্থে যত গোপন শর্তের মৃত্যু হয়েছিল দুর্দম, গৌরবে;
তাদের গন্তব্য হারিয়েছে সমুদ্রের ঘ্রাণে
দিকহীন সূর্যের পড়শি ও মায়ার মাতমে।
আরও একদিন আমরাও মুছে যাবো;
. ―মুছে দিবো পৃথিবীর সুখ!
চার.
একাগ্রতার বাইপাস ধরে এগিয়েছি সুদূর
নগন্য পাপ আর ইতিহাস কাঁধে অস্ত্রের মতোন
লাল হওয়া লজ্জা নিয়ে সৌখিন পুকুর
দুরন্ত সেসব চিন্তার কুঠার কেটে কেটে
নিমগ্ন হয়েছে ঘর পালানো সতীত্বে।
তুমি তো জানো সম্পর্ক মুখোমুখি দাঁড়ালে সম্ভ্রম নষ্ট হয়ে যায়;
অলৌকিক ফ্রেমে আটকে যায় নগরীর ক্ষুধা
আরো যতো মায়ার গজদাঁত দাঁড়িয়েছে ভ্রমে―
তাদের আস্কারা সমেত খুলেছি হাজার জানালা!
তুমি আমার পকেটে মুগ্ধ;
. নিত্য খবরের মতো তাজা অসুখ
. ―না বাক্যে কালো কবুতর।
বাকিরাও এমন লক্ষ জানালায় মুখোমুখি―
হয়ে আছে অস্থির।
আধুনিক মানুষ শেকে কভু থাকেনা মগ্ন―
. চারপাশে গুছিয়ে রাখে সুখের অসুখ।
পরাপারহীন সেসব নৌকার গলুইজুড়ে ছড়িয়ে রাখে সতেজ ভ্রূণ;
যেন হারিয়ে গেলে এক আমি
অগনিত আমিরাও শোকাতুর হবে―
. কান্নার মমিতে ভরিয়ে তুলবে শহর।
কেউ কাঁদে না; আড়াল হলে কেউ―
ধীর লয়ে একটি অক্ষম জানালা বন্ধ করে দেয়;
খুঁজে নেয় আরেকটি মৌলিক আকাশ,
. আরেকটি নিজস্ব বাইপাস।
পাঁচ.
অতপর সঙ্গম শেষ হলো―
মুক্ত হলো পরিবর্তিত পরিক্রমার ওড়াউড়ি;
আর সাকিন যুক্ত বিচ্ছেদে যুক্ত থাকলো মিটমিটে অলঙ্করণ,
যেখানে রোদ্দুরমুখি প্রসাদ আলোকিত বৃত্ত বৃত্তান্তে
ফুরফুরে হয়ে ওঠে আরও।
অগনিত শর্তের উচ্চতা নিয়ে তর্ক চলে বহুরাত―
হয়তো এমনই মুশকিল খদ্দের নিয়ে যোগাযোগ;
. ―ফিরেছিল পাহারায়।
প্রতিটি নাচের হাতলে লেগেছিলো নগ্ন স্বাদের মহড়া,
সেদিনের প্রস্তুতি সভায় আমিও ছিলাম
এমনই শীতার্ত দুপুরে ঘামের হাট বসেছিলো মহল্লায়;
তারপর থুরথুরে যন্ত্রণার কাশবন পেরিয়ে বিস্তৃত হলো
. প্রার্থিত আয়োজন।
যেন আরও একবার গ্রান্থিত হবে পৃথিবীর সকল অসুখ!
দিকশূন্য মাথায় তারার মেলা শেষে
অর্জিত পুরাণে গজিয়ে উঠবে যোনির উঠোনে
বিষাক্ত লালায় ভিজে যাবে সুন্দর―
. এবং সেসব অস্থিরতা শেষে তারা মিলিত হলো;
পরস্পর উন্নত স্তনে মেখে দিলো মুখোমুখি দিন
যেন সদ্য আবিষ্কৃত হলো পৃথিবীর মুখ!
কাছাকাছি, খুব কাছাকাছি না হলে নুয়ে যাবে পবিত্র সার্কাস;
তারপর হঠাৎ কোনো শিৎকার ধ্বনিতে বিচ্ছিন্ন হলো শব
কারুকার্য সমেত নিজস্বীতে আটকে গেলো
একটি নতুন পৃথিবী, সদ্য জন্মলাভ করা একগুচ্ছ পাপ!