ক্ষত
হাত পুড়লে
শুকিয়ে আসে ঘা
মন পুড়লে
বাড়তে থাকে ক্ষত
বন পুড়লে
বাড়ে কেবল ছাই
চাঁদ পুড়লে
জ্যোৎস্নাজলে নদী ভেসে যায়—
এসব দেখে মনকে বলি
বিরহ তুই রাখবি পুষে কত!
যতই বলি
বিপথগামী মন
ক্ষততে দে—একটুখানি প্রলেপ
কিন্তু তার যে তাড়া নাই
বাড়া ভাতে পড়ে যে তার ছাই
করে না সে একটুও ভ্রুক্ষেপ
বরং দহন বাড়ছে দেখে
ক্ষতে
মন যে নুনের তীর করে নিক্ষেপ!
প্রতিমূর্তি
গোলাপ বাগানের ওপারে
তুমুল অন্ধকার
সে কেবল আমার
নদীজলে ভেসে যায় কে?
লখিন্দর
না আমার পোড়া ঘর!
নগরীর নিৎসঙ্গতা সেও
এক জটিল অসুখ
ভরে থাকে এ বুক
লাশকাটা ঘরে কে শুয়ে?
সে আমার শব
চারদিকে মৃত্যুর উৎসব।
নির্বোধ মানবের হাত
সকালের মিহি বাঁকা রোদ
শরীর ছুঁয়ে থাকে
প্রেমশূন্য অন্ধ হৃদয় জেগে থাকে নির্বোধ
জ্যোৎস্নারৌরভ
রাতে গায়ে মেখে কয়েক চামচ
তবু জাগে না চেতনার রঙ অসাড় অনুভব
মুখে মাখি ঘাসের শিশির
পাখির শুনি শিস
মাঠের সবুজে চোখ কেন হয় না অধীর
দিন-রাত্রি-সকাল
এইভাবে পার হয়ে যায়
নির্বোধ মানবের হাত ধরে থাকে মহাকাল।
নিষিদ্ধ জীবন
আমরা প্রতি বছর
একবার বনের ভিতরে যাই
বনের ভেতর
পাখি খুঁজি হরিণ খুঁজি
বৃক্ষ খুঁজি বনফুল খুঁজি
আমরা প্রতি বছর
একবার বনের ভেতরে যাই
বনের ভিতর জল খুঁজি—টলটলে নদী খুঁজি
রহস্যময়তা খুঁজি
আমরা প্রতি বছর
একবার বনের ভেতরে যাই
বনের ভেতর
আমাদের নিষাদ জীবন খুঁজি
আমরা প্রতি বছর
একবার বনের ভেতরে যাই
শহর থেকে পালিয়ে একবার যাই
আর নর-নারীর
নিষিদ্ধ জীবন খুঁজি।
অন্ধের চোখে সানগ্লাস
অন্ধের চোখে সানগ্লাস
সাজানো মঞ্চ
থামে না ক্যামেরার হাজারো ফ্লাস
খুব ব্যস্ত টিভি চ্যানেল
জানি মুখে দুর্গন্ধ
ভাঙা দাঁতে মজবুত রুট ক্যানেল
ঘোরে মিউজিক্যাল চেয়ার
যে যার মতো বসে যায়
কেউ আর করে না কাউকে কেয়ার
গর্তে ঢুকেছে বিবেক
ইঁদুরে কাটে
ব্যাংক থেকে হাজার কোটির চেক
মগজে বসে শয়তান
দিনে ভগবান ভগবান
রাত গভীর হলেই কল্কেতে দেয় টান
অন্ধের চোখে সানগ্লাস
থামে না ক্যামেরার হাজারো ফ্লাস।