গতিবিন্যাসের শিল্পকলা
মন খুলে গেছে—
খোলো, খুলে ফেলো নিজেকে এখন,
চোখ বড়-বড় করে বিস্ময় প্রকাশ
. করব না এবেলা,
সমুদ্র উত্থান নিয়ে অনাবৃত হওয়ার খেলা।
খোলা চিঠি পড়ে ফেলি—চোখ মেলি
কোনো রাখ-ঢাক থাকবে না,
ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি স্তর থেকে করি
. খননের কাজ,
উন্মোচিত হওয়ার জন্য খুলি ভাঁজ
খোলাদুয়ারের হাওয়া লাগুক আজ।
আবেগ অনুভূতির শিহরণ নিয়ে
গতিবিন্যাসের শিল্পকলা,
উন্মুখ হওয়ার ইঙ্গিতে ইঙ্গিতে ফোটে
. মুক্ত স্বরধ্বনি,
হাতে টেনে নেই রত্নমণি
নেই কোনো বাণিজ্যজীবীর ছলাকলা।
মন খুলে যায়, চোখ খুলে যায়
বনবাদাড়হীন খোলা মাঠ—
জেগেছে উপলব্ধির আর্দ্রঘন পাঠ।
তুরীয়ানন্দ
দ্বীপান্তর ও কালাপানির নির্বাসন থেকে চলে আসি
এখনো মরিনি! ফসিলফুয়েল হয়ে জ্বলি
দেখো—এই আলো চেনা যায় কি না?
ঋজুপ্রকৃতির মধ্যে এখনো রয়েছি বেঁচে
নেচে ওঠে প্রফুল্লতা, প্রসন্নতা কাকে বলে
তা তুমিও জানো! সরল অন্তরে উচ্ছলতা নিয়ে
নদীস্রোত আজ তৈরি করে অনুপ্রভা।
বরফঠাণ্ডায় জমে যাইনি এখনো
চেনাপাতে যাই—বিদ্যুৎপাতের মধ্যে দিয়ে যাই
গন্ধ-পুষ্প নিয়ে এসেছি আবার;
কপটতা নেই, পেনাল কোডের ভয় নেই
অনুতাপহীন থাকুক সখিত্ব।
আমি ফিরে আসি পান্থ হয়ে বারবার
তোমারই রূপমাধুর্যের চূড়োয় চূড়োয়,
ফুরোয় না কখনো সে লাবণ্য ও সুষমতা
ইউরেনিয়ামের খনিতে তুরীয়ানন্দ।
অনুপ্রভা
অনুপ্রভা তোমার কি দহনক্ষমতা
এখনও আছে? গাছে তোমার কী পুষ্প?
আগুন লাগানো অগ্নিপাত্র
ধরেছিলে কাছে! পাছে পুড়ি—ভয় ছিল!
ছাই-ভস্ম হয়ে খাক হব
হইনি তখনো! এখনো জ্বলছি তোমার উনুনে!
এখনো বিদ্যুৎবাহী তুমি? বাজপড়েও—
কিংবা বজ্রপাতে—রাতে পুড়ে ছাই হওনি?
ইলেকট্রিক-শক নিয়েও আমি আছি
দূরে-ভগ্নস্তূপে। কূপে পড়ে নিবু নই।
বিদ্যুল্লতায় আবারও
সামনের শীতে। নিতে চায় দ্যাখো বিদ্যুতের পরিবাহী প্রাণ।