পাগলা ঝোরার দিন
ওইখানে দোজখের আগুন, হলহল কলকল
ধেয়ে আসছে অন্য নামে
লোমের আড়ত যায় পুড়ে
চুপচাপ দাঁড়িয়ে যাই পথের পরে
নিঃশব্দ চোরকাঁটা টাগডুম ঢোলক বাজায়
রাজ্য কাঁপিয়ে দেয় উন্মাদ ঢেউ
নহবত সারা হলে বিপুল ক্ষুধায়
পাথর ফাটিয়ে ছোটে পাগলা ঝোরা
পাগলা ঘণ্টা বাজলেই চলে আসব
ওটাই আমার কাজ, ঘণ্টার সাথে সাথে নাচ
নাগরিক চৌহদ্দীতে ক্যাবেরা কারবালা
যাই-ই বলো না কেন, আমি আসবো
আদাব দিয়ে দাঁড়াবো বাহুলগ্না অগ্নি সাথে
পুড়ে যাওয়া মুখে মেখে নেবো আহুতি
তারপর নাচের পেখম মেলে ঘুরে ঘুরে
বীভৎষ্য কাহন যাব গেয়ে, জানি
স্পর্শ করবে একঝাঁক পাগলা তুর্কি
নেচে যাব, থামবো না কিছুতেই
রক্তের কোষে কোষে প্রাচীন সভ্যতা
অজান্তা, অলিম্পাস ঝিলিক-ঝম্পা তালে
ফের হাসে, ফের কাঁদে
দেখতে দেখতে খেলা ফুরিয়ে আসে
চলে যাই পবন হয়ে, প্রাচীন অরাধ্য টানে
কে পারো বেঁধো তো দেখি!
ভিন্নস্রোত বাঁক
নদীরা আমার সহোদরা, জন্ম থেকে জানে সব কথা
পূর্ণিমা এলে পরে এই যে আমি উন্মাদ হয়ে যাই
সে-কথা গোপন রেখেছে তারা, ভালোবাসে তাই, কিন্তু
আমি চাই, সকলেই জানুক সেই উন্মাদ উদ্যাপন
অস্বীকৃত নৃ-গোষ্ঠী অকুণ্ঠ উচ্চারণে বলুক সেকথা
একঘেয়ে চরাচরে জন্মেছে যে উদগ্রীব ভিন্নস্রোত বাঁক
মোহনায় মোহনায় তারই প্রতিধ্বনি ঘুরে বেড়াক
ছুটে আসে আগুনের-হল্কা রহস্য বিদিত চিৎকার
যদিও এসব ভুলে যাই, তবু মনে রাখার আছে আগ্রহ
ভিন উপগ্রহে উড়ছে পাড়ি দেয়া দিন, কিছুটা রঙিন
আবার প্রাচ্যকলার ভোর তাড়া দেয়- আছিস নাকি!
সব মিলে একাকার আরাধ্য জীবন। কখনো অন্যমনে
ভুলেছি নদীর আহ্লাদ, গলা ধরা সহস্র আবদার
শীতের প্রবল ছোবল দিয়ে গেছে যুক্তিহীন অম্লান স্বাদ
জাদুকর, কোথায় গেলে তুমি! পারো নাকি এইসব
জমে থাকা বরফস্তূপ থেকে আগুনমুখার জন্ম দিতে!
অনাবাসী চাষাবাদে
এইখানে নদীমাতৃক খেলাধুলা, অনেক অতৃপ্ত বৃত্ত রচনা
বারংবার অভাব বোধ করেছি দেশাল কায়দাকলার সখ্য
মনে মনে খুঁজেছি, কার কাছে গেলে পাবো ফিরে এসব
তারপর অনাবাসী চাষাবাদে ভুরিভুরি সমভাষার মানুষজনে
আস্থা রেখে ভেবেছি, হয়তো সঠিক সিদ্ধান্তই গ্রহণ করেছি
ভালো হলো দূরাবাসে পেয়ে গেছি বন্ধুত্বের অপার নিকেতন
আরও কিছুকাল পর ধীরে ধীরে হতবাক
সেসব বন্ধুত্বের দিকে অবাক তাকিয়ে চমক ভেঙে যায়
এই কি নির্বাচন! বাঙালিয়ানা পথে ভুল বয়ানে
বন্ধুত্ব খুঁজে ফেরা বন্ধুত্বের নামে একোন রাজ্যে এলাম
অনেক ধোকা-বোকা খেলা দেখতে দেখতে বিষণ্ন বিকেলে
সম্পর্কের লেজে আগুন লাগাই। পুড়ে যায় চোখা-নখ
তামাম গল্প-গোরের সমস্ত মৃত শাবক, পুড়ে যায় অহংকার
অতিরিক্ত ধূম্র প্রজ্বলন ঢেকে দেয় সমূহ ঘোর
চিনে নেবার অবসরে, আজও মন্দিরা বাজিয়ে যাই
গান গাই- নাই নাই কিছু নাই ধূলিসাৎ পথে, দারুণ লাগে
ফেলে দেই দূরাবাসে নিজ ভাষায় অতিরিক্ত সুখ ভোগ
রাহুগ্রাস নির্লিপ্ততায়। এই ধুলোর বসুন্ধারায়
বন্ধুসুখ হারাম করে খুঁজে নেই অদৃশ্য ব্যবস্থা
হয়তো বোকা বলবে, নাহয় পথভ্রষ্টও বলতে পারো
বলো বলো আরও বলো, কেয়ার করি না কিছুতে
গান গাই পথে পথে, অনেক দূরের অচেনা স্টেশনে
সেখানে কেউ শুনুক বা না-শুনুক, অন্তত ভণ্ডামি দেখায় না।