ঘুমিয়ে পড়া গণিত শিক্ষিকা
ঘুম থেকে জেগে দেখি, শ্রেণীর রসাতলে
ভেসে যাচ্ছে আজ ভূগোলের বইখাতা
সমস্ত আয়োজন আর উল্লিখিত ছাত্রসখা।
যত মথের ন্যায় ঝাঁপিয়ে পড়া আগুন প্রেমিকেরা
সেইরূপ, আজও কিন্তু আড়ালে তোমার গোপন সম্ভাবনা
ফলে আমি ডাক পাঠাচ্ছি, ঝড়ের রাত্রে,
কাহিনীর ন্যায় কর্মে শুধু অ্যাপ্রোনে ভর করে
দেখি তুমি আমার মধ্যে ঘুমিয়ে আছ
থমকে যাওয়া শীতের মতো, নির্বিচারে
ভুল সূত্রে নকল বৃত্ত আঁকো।
অদ্ভুতুড়ে
চাঁদের মতো শুভচিহ্ন আঁকা
গ্রামের পথ বিস্তারিত বাঁকা
ভয় পেয়ো না, জয়কে ধরো ছেঁকে
হাঁটতে থাকো অন্তরাকে এঁকে।
সামনে দিঘি, শানবাঁধানো ঘাট
সমবাহুর চিহ্ন টানো। বাট,
এবার দ্যাখো কালো নূপুর হয়ে
নৃত্যে তুমি যাচ্ছো ক্ষয়ে-ক্ষয়ে।
মনকে করো পুরো দেহের তালা
আর বাহুকে গর্বে গলার মালা
এক কেশরে থাকে অনেক ফুল
তুমিই জানো চুল ছিলো না ভুল।
কবির হাতে স্পর্শটুকু প্রিয়া
যেমন রাখে পিঞ্জরাতে হিয়া
গুপ্ত গানে সুপ্ত সদা সুরে
কেমন গ্রাম? লাগে অদ্ভুতুড়ে।
এক দেশে এক নিবারণচণ্ডী
গগন, তোমাকে গণনার প্রত্যয়ে আজ আমি খণ্ডিত রূপ ধরে
শুদ্ধ শরতের গ্রন্থিত কাশবনে দাঁড়িয়েছি
অলীক এক নিবারণচণ্ডীর প্রহসনে।
ভেবেছি পূর্ব হতে পশ্চিমে যাবো
অথচ ঝাট করে এত বিরামশূন্য দিক আর মহাদিকে
ছেয়ে যাবে এ-প্রান্তর, ভাবিনি!
তারা অতীতরুদ্ধ বর্ণ-ব্যাকরণহীন মহাযুগ,
মহাশতাব্দীর ভাগ্নে ও ভগিনী।
তাদের তারা ও তামাশা, কুঞ্জ-নিকুঞ্জের নক্ষত্রবাটিকা
আর কী সব অনূঢ় অব্যাহত দর্শনের ঝকমারি;
প্যাঁচের ধারাপাতে পঞ্চায়িত দিনরাত্রি।
তবু আমি দুইতীরে জোনাকির আস্ফালনে
সূর্যকে অহিংসার মন্ত্রে গেঁথে রাখি।
দক্ষিণে চাঁদ কিছুটা চঞ্চল;
আধলা রূপের মাঝে ফুটে ওঠা এক আগারকাহিনী
বাঁধো তো আঁচল দিয়ে, ওহে কাম—আঁখিতে এক্ষণই।
আর সেই হতে অবিরাম উত্তরে তুমি
উত্তরবঙ্গীয় দেহ-ভাষা নিয়ে, আখ্যানে আগড়-বাগড় করা
বিজলী ও বজ্রের মহিমায় অমাকে ভয় দেখাও
ভূতে বিশ্বাস স্থাপিত কর, পরিত্যক্ত খেলার ময়দানে
আক্রান্ত আমাকে একত্র করে ফের যুক্ত হতে চাও;
দেহে, প্রাণে—আঙরা ও আতরের লোভে।
বন্যা বন্যা খেলা
এই শ্রাবণে আধেক রাখো ঢেকে
চিহ্নটুকু তার
ধানের পাতা, মাছের ভ্রাতা এসে
করুক অহঙ্কার।
এই জমিতে বরজ ছিল আহা!
ডুবেই হলো কূপ
জাতির সাথে জাফর মরে কেন?
কৃষক ব’লে চুপ।
ফাঁপর আসে হাঁপর-ছাড়া বায়ু
বইছে রাতদিন
বাঁধ ভেঙেছে, মান ধুয়েছে জলে
আমরা লজ্জাহীন।
বিষের মতো বিষম লাগে খাও
ভাতের মতো ফাঁদ
ভাসছে হাঁড়ি জ্বলছে ক্ষুধা জলে
যমজ সুরে কাঁদ।
বাঁচতে হলে মরতে হবে তাও
লাইন ধরে ধরে
বচন বলে খনার কথা ঠিক
অক্ষরে অক্ষরে।