দিব্যনদী
রাঙামাটিতে আমিও হাঁটি—
জলকষ্ট—ঘূর্ণিবায়ু অগ্নিমুখে নিয়ে যায়
তারপরও অংশুমালা নিয়ে
. মুকুলিত হই।
দিব্যবৃক্ষ আমারও আছে
. পুষ্পপত্র নিয়ে
. মনোদুঃখ ভুলি
. উথলিত হই
. চনমনে হই
চন্দ্রসুধা পান করি।
মরুস্থল থেকে—দূরে যেতে যেতে
আমিও ব্যাকুল হই—আমি কোনো গণ্ডশিলা নই!
উচ্ছলতা দিব্যনদী হয়ে যায়।
. প্রাণোচ্ছল জলেশ্বর হয়ে যায়।
মধুকোষ
বেদনার অন্ধকার আসে
অন্ধকূপে কখনো কখনো পড়ে যাই
. হাইপাই করি—
একটুকরো রশি নেমে আসে
সেই রশি ধরি!
রশি ধরে উঠে আসি। এইভাবে বাজে বাঁশি!
দুঃখআক্রান্ত চিৎকারের মধ্যে ডুবে থাকতে পারি না—
নদী ও সমুদ্র ভাসিয়ে তুলেছে!
উছলে ওঠার শক্তি টের পাই—
. হতাশার কিছু নাই!
ক্রন্দনের আয়ুসীমা আছে—
কতদূর টেনে নিয়ে যাবে ধীবর ও মাছে?
বুকে চেপে বসা পাথরের কারণে গোঙানি
. তুঁতপোকা শুধু নয়—আমিও করেছি সহ্য!
কর্জ শোধ করে কাঠফড়িঙ হয়েছি—
মধুকোষ নিয়ে আমাকে আমিই বহন করেছি!
অংশুমালা
প্রস্তুরীভূত হয়েছি বহুবার
. মরীচিকার পেছনে ছুটে চলেছি আমিও—
ধূলিধূসরিত অবস্থায় ঢেকে গেছি—
চারণভূমিতে বিপন্ন-বেদনা নিয়ে
. হাঁটতে পারিনি,
এরমধ্যে হিমঝড়ে পড়ে
প্রদীপও হারিয়ে ফেলেছি।
যারা অংশুমালা নিয়ে খেলা করছে
তারা কতটুকু বিভা-দ্যুতি নিয়ে উদ্দীপিত?
তবে আমি নিজেরই অগ্নিপ্রভা নিয়ে বেঁচে আছি
বায়ুতাড়িত সময়ে—কাঁকুরে মাটিতে।
স্বচ্ছন্দতা
নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার সীমা আছে
স্বচ্ছন্দতা হারিয়ে নিজেকে তুলোধুনো করে
. রাখতে পারি না।
ধপ করে পড়ে গেলে খপ করে ধরবে
. রাক্ষুসে মাছেরা!
হারাতে পারি না নিজের ঝঙ্কার ও ভূষণ
আমি হব শুধু কি ত্রাহি-মধুসূদন?
আমারও হৃদপিণ্ড সচল রাখতে হবে—
নিজের ভেতর নিজেরই তাপ ও আবেগ কি থাকবে না?
উর্দিপরা কারো ভৃত্য যেন
. মনিবের জুয়োখেলার জন্য রাতবেলা
. আমার ঘরের আলো নিভিয়ে না দিতে পারে!
আত্মমুখিতা
দেখভাল করার লোকেরা শুধুই নিজেদের দেখছে
খবরদারির নামে
. একটু কি তারা ঘামে?
ভার নেওয়ার পর
শুধুই বহন করছে নিজেদের ভর
অন্যদের আমানত—সপ্তসিন্ধু
. বিন্দু বিন্দু করে
জমেছিল। তাও অধিগ্রহণের নামে—
কার জিম্মায় চলে যায়!
কর্তব্যজ্ঞান ও দায়িত্ববোধ যাদের থাকার কথা
তারা পরাভূত হয়ে পরপুষ্ট হয়ে যায়
দত্তকপুত্র কি আজ সাজ পরে এসে
. নেবে সব দায়?
আত্মমুখিতা রয়েছে—আত্মগ্লানি নেই
কোলেপিঠে করে মানুষ করার লোক—
. কেউ কি থাকবে না?