পহেলা বৈশাখে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনের হাত থেকে ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী সম্মাননা পদক পেলেন লোকসংগীতের বিশিষ্ট শিল্পী অণিমা মুক্তি গমেজ। বাংলাদেশ ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী প্রদত্ত শিশুপার্কের সামনের মঞ্চে গণসঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীরের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী অরূপরতন চৌধুরী, আবৃত্তিকার রূপা চক্রবর্তী প্রমুখ। শিল্পী অণিমা মুক্তির সঙ্গে একই সম্মাননা গ্রহণ করেন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ফাহিম হোসেন চৌধুরী, শহিদকন্যা ডা. নূজহাত চৌধুরী ও কবি রাজু আলীম।
বাংলাদেশ লোকসঙ্গীত পরিষদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক অণিমা মুক্তি গমেজ জন্মগ্রাম ঢাকার নবাবগঞ্জের হাসনাবাদে স্কুলজীবন থেকেই শৈশব থেকেই সংগীতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সংগীতে তিনি প্রথম তালিম নেন নিজ গ্রামের শিল্পী মায়া গাঙ্গুলির কাছে। এরপর নীনা হামিদ, কৃষ্ণকান্ত আচার্য, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী প্রমুখ শিল্পীর কাছে প্রশিক্ষণ নেন তিনি। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএসএস, শিক্ষায় এমএড ডিগ্রি ছাড়াও সঙ্গীতে এমমিউজ ডিগ্রি রয়েছে তাঁর। সংগীতে অবদানের জন্য ঋষিজ সম্মাননা ছাড়াও তিনি মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ঢাকা কালচারাল রিপোর্টার ইউনিটি ও ত্রিপুরা ফোক একাডেমি সম্মাননা অর্জন করেছেন।
বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশে টেলিভিশন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ লোকসঙ্গীত পরিষদ, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে নিয়মিত সঙ্গীত পরিবেশন করেন তিনি। অণিমা মুক্তি বিদেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসবে বাংলাদেশের হয়ে অংশ নিয়েছেন। উজবেকিস্তানের ‘সেভেনথ ইন্টারন্যাশনাল মিউজিকেল ফেস্টিভ্যাল’-এ ৭০টি দেশের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪র্থ স্থান অর্জন করেন তিনি। এ ছাড়া মিলানের ‘এক্সপো ২০১৫’, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফোবানা ২০১৫’, কলকাতার ‘আব্বাস মেলা’ এবং অনুপ ঘোষালের সঙ্গে নিউইয়র্কের ‘বাংলাদেশ-ইন্দো কালচারাল ইভিনিং’-এ অংশ নেন। এছাড়া তিনি ভারত, নেপাল, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, পোল্যান্ড, আরব আমিরাত প্রভৃতি দেশে আমন্ত্রিত শিল্পী হিসেবে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন।
বেশ কিছু একক ও দ্বৈত অ্যালবাম রয়েছে তাঁর। এর মধ্যে রয়েছে ‘ইছামতির তীরে’, ‘আমায় এতো কেন ডাক দিলি’, ‘মনের মানুষ’ ও ‘সাগর কূলের নাইয়া’। তিনি ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালীর পাশাপাপাশি লালন সাঁই, হাসন রাজা, রাধারমণ দত্ত, সৈয়দ শাহনূর, বিজয় সরকার, জসীমউদ্দীন, শাহ আবদুল করিম প্রমুখের গান পরিবেশন করে খ্যাতি অর্জন করেছেন।