এসএম সুলতানের জন্মদিন আজ চিন্তাসূত্র ডেস্ক: আজ ১০ আগস্ট, আজ বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের জন্মদিন। ১৯২৪ সালের আজকের এই দিনে নড়াইলের চিত্রা নদীর পাড়ে মাছিমদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করে বিশ্ববরেণ্য এই শিল্পী।
পাঁচ বছর বয়সে এসএম সুলতান স্থানীয় স্কুলে ভর্তি হন। দারিদ্র্যের কারণে অল্প দিন পরই তিনি স্কুল ত্যাগ করে বাবার রাজমিস্ত্রির কাজের সহকারী হিসেবে নিয়োজিত হন। এ সময় তিনি নিজে নিজে ছবি আঁকা শেখেন। কাঠ কয়লা, কাঁচা হলুদ ও পুঁইশাকের বীজের রস দিয়ে তিনি ছবি আঁকতেন। এসব ছবি স্থানীয় জমিদার ধীরেন্দ্রনাথ রায়ের দৃষ্টিতে পড়েন। পুরস্কার স্বরূপ তিনি ছবি আকার কিছু সরঞ্জাম কিনে দেন এবং স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। স্কুলের ছাত্র থাকা অবস্থাতেই বিখ্যাত রাজনৈতিক ও শিক্ষাবিদ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতি এঁকে সুলতান খ্যাতি অর্জন করেন। স্কুলের শেষ পরীক্ষায় পাস করার আগেই সুলতান বাড়ি থেকে পালিয়ে কলকাতায় চলে যান। কলকাতায় তিনি শাহেদ সোহরাওয়ার্দীর বাসায় আশ্রয় নেন। সুলতানের পূর্ব নাম ছিল লাল মিয়া। শাহেদ সোহরাওয়ার্দী এ নাম পাল্টে শেখ মুহম্মদ সুলতান রাখেন। তিনি সুলতানকে কলকাতা আর্ট স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। মাত্র তিন বছর পরই আর্টস্কুল ত্যাগ করে ভবঘুরে জীবন শুরু করেন। এসএম সুলতান দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় পাঁচ-দশ টাকার বিনিময়ে গোরা সৈন্যদের ছবি আঁকতেন আর ভারতের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়াতেন। দেশ বিভাগের পর কলকাতা ত্যাগ করে তিনি পাকিস্তান চলে যান। কিছুদিন লাহোরে থাকেন এবং করাচি আর্ট স্কুলে দুই বছর শিক্ষকতা করেন। এরপর তিনি ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন শহর ভ্রমণ করেন। এসব শহরের ছবি এঁকে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং চিত্রা নদীর তীরে জন্মভূমি নড়াইলের মাসিমদিয়া গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর তিনি মারা যান। তাঁর ছবির প্রধান বিষয় কৃষক, জেলে, কামার, কুমারসহ পল্লীর শ্রমজীবী মানুষের জীবন-জীবিকা, সংগ্রাম। এছাড়া রয়েছে খড়ের ঘর, খালবিল, গাছপালা, সনাতন চাষের উপকরণ, মাছ ধরার সরঞ্জাম, সংগ্রামের প্রতীক ঢাল, সড়কি, রামদা, বল্লম, লাঠি ইত্যাদি।
মন্তব্য