স্বাভাবিক গণ্ডির ভেতর যে বিপুল জীবন স্রোত বহমান, সেই ধারাবাহিকতার আপসহীন রূপকার উৎপলকুমার বসু আর আমাদের মাঝে নেই। এই সত্য আমি যেন কিছুতেই মানতে পারছি না!
কিন্তু, আমি তো এ-ও জানি, তাঁর প্রথাবিরোধী সমস্ত লেখাই মানবজীবনের সামগ্রিক শেকড় সন্ধানের ক্ষেত্রে আমাদের সচেতন ও আগ্রহী করে তুলেছিল । কেননা, স্বমহিমায় ভাস্বর এই কাব্যশিল্পীই তো নিজস্ব এক অমৃত বাকভঙ্গি উদ্ভাবন করেছিলেন। যা মাধ্যমে চারু ও প্রমিত শিক্ষিত নির্মোক ছেড়ে আমাদের গত কয়েক দশকের নীরস-পানসে-ক্লান্ত একঘেয়ে কাব্যধারাকে অত্যাসন্ন-অমিত সম্ভবনাময় উজ্জ্বল এক দিশায় রূপ দিতে পেরেছেন তাঁর সমস্ত জীবন ঢেলে । তাই, প্রথা এবং জনপ্রিয়তা উভয়কে রেয়াত না করে কেবল নিজের লেখায়ই নিজেকে স্পষ্ট করে তুলেছেন সর্বত্রই । ফলে বরাবরই মননশীল পাঠকের প্রচুর সমাদর-সমীহ জুটেছে তাঁর ভাগ্যে!
আমার উদ্বেল যৌবনে-‘জীবনানন্দ কবিতাপত্র’ সম্পাদনাকালে অনবদ্য এই মানুষটির সঙ্গে প্রচুর পত্রালাপ হয়েছে। কফি হাউসে একবার আড্ডাও দিয়েছি। স্বাচ্ছন্দ্যে নিজের সদ্য লেখাটি ছাপতে দিয়েছেন আমাকে ।
তাই, আজ আমাদের এই প্রিয় কাব্যশিল্পীর প্রয়াণে বেদনাপ্লুত চিত্তে সশ্রদ্ধ সম্মান জানাই!
বরিশাল
০৩ . ১০ . ২০১৫