আজ ১২ অক্টোবর। আজ কবি কামিনী রায়ের জন্মদিন। ১৮৬৪ সালের আজকের এই দিনে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশের) বাকেরগঞ্জের বাসণ্ডা গ্রামে (বর্তমানে যা বরিশাল জেলার অংশ) জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা চণ্ডীচরণ সেন একজন ব্রাহ্মধর্মাবলম্বী, বিচারক ও ঐতিহাসিক লেখক ছিলেন।
উইকিপিডিয়ায় তার সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে, কামিনী রায় একাধারে কবি, সমাজকর্মী এবং নারীবাদী লেখিকা লেখক ছিলেন। তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের প্রথম নারী স্নাতক ডিগ্রিধারী। একসময় ‘জনৈক বঙ্গমহিলা’ ছদ্মনামে লিখতেন।
কামিনী রায় ১৮৮০ সালে কলকাতা বেথুন স্কুল হতে এন্ট্রান্স (মাধ্যমিক) পরীক্ষা ও ১৮৮৩ সালে এফএ বা ফার্স্ট আর্টস (উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বেথুন কলেজ থেকে ১৮৮৬ সালে ভারতের প্রথম নারী হিসাবে সংস্কৃত ভাষায় সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ১৮৮৬ সালেই তিনি বেথুন কলেজের স্কুল বিভাগে শিক্ষক পদে নিযুক্ত হন।
যে যুগে মেয়েদের শিক্ষাও বিরল ঘটনা ছিল, সেই সময়ে কামিনী রায় নারীবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। তার অনেক প্রবন্ধেও এর প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি নারী শ্রম তদন্ত কমিশন (১৯২২-২৩) এর সদস্য ছিলেন।
১৮৮৯ সালে মাত্র পনের বছর বয়সে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘আলো ও ছায়া’ প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটির ভূমিকা লিখেছিলেন হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ‘নির্মাল্য’(১৮৯১), ‘পৌরাণিকী’ (১৮৯৭), ‘মাল্য ও নির্মাল্য’ (১৯১৩), ‘অশোক সঙ্গীত’ (সনেট সংগ্রহ, ১৯১৪), ‘অম্বা’ (নাট্যকাব্য, ১৯১৫), ‘দীপ ও ধূপ’ (১৯২৯), ‘জীবন পথে’ (১৯৩০), ‘একলব্য’ প্রভৃতি। অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত ‘মহাশ্বেতা’ ও ‘পুণ্ডরীক’ তার দুটি প্রসিদ্ধ দীর্ঘ কবিতা। এছাড়া, ১৯০৫ সালে তিনি শিশুদের জন্য ‘গুঞ্জন’ নামের কবিতা সংগ্রহ ও প্রবন্ধগ্রন্থ ‘বালিকা শিক্ষার আদর্শ’ রচনা করেন।
১৯২৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক কামিনী রায়কে ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ প্রদান করে সম্মানিত করেন। ১৯৩০ সালে বঙ্গীয় লিটারারি কনফারেন্সের সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৩২-৩৩ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদেরও সহ-সভাপতি ছিলেন কামিনী রায়।
১৯৩৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মন্তব্য